রাজধানীর বেইলি রোডে প্রায় ৩৫ বছর আগে সগিরা মোর্শেদ নামের গৃহবধূকে হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
ঢাকার বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইন এ রায় ঘোষণা করেন বলে বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
বার্তা সংস্থাটির খবরে আরও বলা হয়, আদালত সগিরার ভাশুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী ও তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন এবং মন্টু মোড়ল নামের তিন আসামিকে খালাস দিয়েছে।
হত্যা মামলায় সায়েদাতুল মাহমুদার ভাই আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান এবং ভাড়াটে খুনি মারুফ রেজাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। একই সঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয় আদালত, যা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সাজা খাটতে হবে আসামিদের।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলার রায় পিছিয়ে ১৩ মার্চ দিন ধার্য করে আদালত।
এর আগে ৮ ফ্রেব্রুয়ারি মামলাটির রায়ের দিন নির্ধারিত ছিল, কিন্ত ওই দিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় ২০ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী তারিখ ঠিক করে আদালত। সেটা ফের পিছিয়ে ১৩ মার্চ করা হয়েছিল।
রাজধানীর বেইলি রোডে ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই সগিরা মোর্শেদকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় সগিরার স্বামীর দায়ের করা মামলায় প্রথমে মারুফ রেজা ও আনাস মাহমুদকে আসামি করা হয়।
২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম আদালতে চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, পরিবারিক কলহের জের ধরে সগিরা মোর্শেদের সঙ্গে আসামি শাহীনের বিভেদ তৈরি হয়েছিল। এ ছাড়া শাশুড়ি সগিরাকে অপছন্দ করতেন এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে সগিরা-শাহীনের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, সগিরার গৃহকর্মীকে মারধর করেন ভিকটিমের ভাশুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী। এ নিয়ে পারিবারিক বৈঠকে সগিরাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন শাহীন।
এতে উল্লেখ করা হয়, আসামিরা নিজেদের বাসায় বসে সগিরাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ডা. হাসান আলী তার চেম্বারে অন্য আসামি মারুফ রেজার সঙ্গে ২৫ হাজার টাকায় হত্যার চুক্তি করেন। চুক্তি করা ২৫ হাজার টাকার মধ্যে মারুফ রেজাকে ১৫ হাজার টাকা দেন হাসান আলী। ১০ হাজার টাকা পরে দেয়ার কথা বললেও আর দেননি।
২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালত সগিরা মোর্শেদের ভাশুরসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৩১ বছর পর এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হয়। এরপর গত বছরের ১১ জানুয়ারি মামলার বাদী ও সগিরা মোর্শেদের স্বামী আব্দুস সালাম চৌধুরী আদালতে সাক্ষ্য দেন।