বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভাঙনের কবলে কুশিয়ারার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ

  •    
  • ১১ মার্চ, ২০২৪ ১৯:১৭

কুশিয়ারা নদীর ৪১ কিলোমিটারই ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত রেখা। এ নদীর ভাঙনের ফলে সংকুচিত হচ্ছে দেশের মানচিত্রও।

সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ এই বাঁধ ভেঙে গত কয়েকদিনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে একাধিক বাড়ি। ভাঙন-শঙ্কায় রয়েছে সীমান্তবর্তী এই এলাকার শতাধিক স্থাপনা।

সিলেট থেকে প্রায় ৯২ কিলোমিটার দূরে জকিগঞ্জের অবস্থান। এটি জেলার সবচেয়ে দূরবর্তী উপজেলা। ভারতের করিমগঞ্জ জেলার বরাক নদের দুটি শাখা হচ্ছে সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদী। সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার অমলশীদ এলাকায় এরা মিলিত হয়েছে।

সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর মাধ্যমেই মূলত সিলেট বিভাগের প্রায় ১০০টি নদ-নদীতে পানি প্রবাহিত হয়। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি একদিকে প্রবাহিত হয়ে বন্যা যাতে না হয়, সেজন্য উপজেলার অমলশীদ থেকে আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ নির্মাণ করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, বর্ষায় অতিবৃষ্টি বা ঢল নামলে প্রায় বছর বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যায় জবিগঞ্জসহ আশপাশের উপজেলা। আবার শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানি কমে গেলেও বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়।

কুশিয়ারা নদীর ৪১ কিলোমিটারই ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত রেখা। এ নদীর ভাঙনের ফলে সংকুচিত হচ্ছে দেশের মানচিত্রও।

এবার কুশিয়ারা নদীর পানি হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের মানিকপুর, ভাখরশাল, সরিষাকুড়ি, ছবড়িয়া ও লালগ্রাম; বীরশ্রী ইউনিয়নের সোনাপুর, পিয়াইপুর, পীরনগর, লক্ষীবাজার, উজিরপুর, কোনাগ্রাম; সুলতানপুর ইউনিয়নের গঙ্গাজল ও ভক্তিপুর; খলাছড়া ইউনিয়নের কাপনা এবং জকিগঞ্জ পৌরসভার মাইজকান্দি এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।

এ ছাড়াও দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় উপজেলার বড়চালিয়া, জামডহর, বেউর, ছয়লেন, কেছরীগ্রামসহ কয়েকটি এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ পানির বিপৎসীমারও নিচে নেমে গেছে। এতে বর্ষা মৌসুমে বাঁধ উপচে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে পুরো উপজেলা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় ভাখরশাল গ্রামের বাসিন্দা জাবেদ আহমদ বলেন, ‘গত কয়েক বছরের ভাঙনে আমাদের এলাকায় ১২ বিঘা ফসলি জমিসহ পাঁচটি বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে।

তার অভিযোগ, বর্ষা মৌসুম শুরু হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড তাড়াহুড়া করে মাটি ফেলে বাঁধ সংস্কার করে। তখন পানির তোড়ে বাঁধ তলিয়ে যায়। তাই বর্ষা শুরুর আগেই বাঁধ সংস্কারের দাবি জানান তিনি।

জকিগঞ্জ সদর ইউপি সদস্য রেয়াজুল ইসলাম রাজু বলেন, ‘কুশিয়ারা নদীর ভাঙনে বহু ঘরবাড়ি ইতোমধ্যে বিলীন হয়েছে। ভাঙনরোধে নদীর তীর রক্ষায় আলাদা প্রকল্প গ্রহণ করা প্রয়োজন।’

বীরশ্রী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘নদীভাঙনের ফলে ঐতিহ্যবাহী লক্ষ্মীবাজার, বড়চালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বহু স্থাপনা এখন নদীগর্ভে বিলীনের হুমকির মুখে রয়েছে। বীরশ্রী ইউনিয়নের পাঁচটিসহ উপজেলার প্রায় ২০টি স্থানে বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে।’

বাঁধ দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়ে জকিগঞ্জের উপজেলা চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমের আগেই কুশিয়ারা নদীর বাঁধ সংস্কার না হলে জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জসহ আশপাশের ৭টি উপজেলা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে পুরো সিলেট বিভাগ।’

বাঁধ সংস্কারে জন্য বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্র্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী খুশী মোহন সরকার বলেন, ‘বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংস্কারের জন্য প্রায় দুই কোটি ৯ লাখ টাকার বরাদ্ধ চাওয়া হয়েছে।’

বাঁধ মেরামতের এ কাজটি আপৎকালীন জরুরি ঘোষণা করে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

এ ব্যাপারে সিলেট-৫ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হুসামুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘নদীভাঙন জকিগঞ্জের অন্যতম প্রধান সমস্যা। নদীভাঙন রোধসহ জরুরি ভিত্তিতে নদীতীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে জকিগঞ্জ-কানাইঘাটের মানুষকে বন্যা থেকে রক্ষা জরুরি। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই কুশিয়ারা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের কাজ সমাপ্ত করতে আমিও চেষ্টা করছি। সংসদে বিষয়টি উত্থাপন ছাড়াও দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এ ব্যাপারে অনুরোধ করেছি।’

এ বিভাগের আরো খবর