বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বসতভিটায় ফিরতে চায় হামলা-মামলায় বাস্তুহারা ৫ পরিবার

  • প্রতিনিধি, ফরিদপুর   
  • ৯ মার্চ, ২০২৪ ২১:৩০

জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ২০২২ সালের ৩০ আগস্ট হারুন শেখ পক্ষের সঙ্গে ফুপাতো ভাইদের মারামারি হয়। মারামারিতে আহত মোহাম্মদ শেখের মৃত্যু হলে হারুন শেখ পক্ষের পাঁচ পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেন প্রতিপক্ষরা। এ ঘটনার পর পাল্টা হামলার ভয়ে পরিবারগুলো পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলে দাবি হারুন শেখের।

প্রায় দুই বছর ধরে নিজ বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ হয়ে যাযাবরের জীবনযাপন করছেন ফরিদপুর সদর উপজেলার মাচ্চর ইউনিয়নের দয়ারামপুর গ্রামের ৫টি পরিবারের শিশুসহ ২৫ জন সদস্য। তাদের অভিযোগ, মিথ্যা মামলা দিয়ে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে লুটপাট করা হয় তাদের ঘরবাড়ি; ঘরের টিন, বেড়া, জানালা, দরজা, আসবাবপত্রসহ প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পত্তি লুটপাট করেছে তাদেরই আত্মীয়রা।

নিজ বসতভিটায় বসবাসের অধিকার ফিরে পেতে শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই পরিবারগুলোর সদস্যরা। ভুক্তভোগী দাবি করা পাঁচ পরিবারের কর্তা হলেন- মো. হারুন শেখ, শহিদ শেখ, লিয়াকত শেখ, জাহিদ শেখ এবং সাছু মৃধা। সাছু মৃধা সম্পর্কে চার শেখের ভাগ্নে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হারুন শেখের মেয়ে নাছরিন আক্তার।

তিনি বলেন- ‘দয়ারামপুর গ্রামের আক্কাছ শেখ, সাখাওয়াত শেখ, ওহাব শেখ, সালাম শেখ, মঞ্জু শেখ, নুরুল ইসলাম টুলু, আনোয়ার খান, আবুল কালাম, কাউছার মোল্যা এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১৫ জন আমার পিতা হারুন শেখ ও আমিসহ আরও ৪টি পরিবারের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা করে। এরপর দলবল নিয়ে হামলা চালিয়ে আমাদের প্রাণনাশের চেষ্টা করে।

‘জীবন বাঁচাতে আমরা পাঁচ পরিবারের ২৫ সদস্য বাড়ি থেকে পালিয়ে আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নেই। এই সুযোগে রাতের আঁধারে প্রতিপক্ষরা আমাদের বসতভিটায় থাকা বাড়িঘর ভাঙচুর করে সব মালামাল, এমনকি ঘরের টিনও লুট করে নিয়ে যায়।’

এ সময় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তিনি প্রায় দুই কোটি টাকার মালামাল লুট ও কয়েকটি ঘরে আগুন লাগানোর অভিযোগ করেন।

নাছরিন আক্তার বলেন, ‘বিবাদীদের ভয়ে আমরা নিজ ভিটায় প্রায় দুই বছর ধরে বসবাস করিতে পারছি না। ৫টি পরিবারের লোকগুলো ফেরারি অবস্থায় অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছি। নিজেদের জমি চাষাবাদ করতে পারছি না। কিছু জমি তারা জোরপূর্বক দখলও করে রেখেছে।’

‘আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। নিজ নিজ বসতভিটায় নতুন করে ঘর তুলে আমরা যাতে শান্তিতে বসবাস করতে পারি এবং নিজেদের জমিতে চাষাবাদ করে ফসলাদি ভোগ করতে পারি সেজন্য প্রশাসনের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।’

সংবাদ সম্মেলনে জাহিদ শেখের স্ত্রী আকলিমা বেগম বলেন, ‘তিল তিল করে গড়ে তোলা আমার ঘরের একটা টিনও তারা রাখে নাই, সব লুটে নিয়ে গেছে। টিভি, ফ্রিজ, পেঁয়াজ, টিন, দরজা-জানালা সব নিয়ে গেছে। গাছগুলো কেটে রেখে গেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই। আমরা আমাদের ক্ষতিপূরণ চাই।’

সংবাদ সম্মেলনে মামলা ও হামলার অভিযোগের বিষয়ে হারুন শেখ জানান, পারিবারিক জমি-সংক্রান্ত বিষয়ে ফুপাতো ভাইদের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে দফায় দফায় সালিশ মামলাও হয়েছে।

সবশেষ ২০২২ সালের ৩০ আগস্ট হারুন শেখের ফুপাতো ভাই মোহাম্মদ শেখ, ভাতিজা আক্কাস শেখ ও সাখাওয়াত শেখদের সঙ্গে তাদের মারমারি হয়। মারামারি চলাকালে লাঠির আঘাতে মোহাম্মদ শেখ আহত হলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিন দিন পর তিনি মারা যান। তবে মোহাম্মদ শেখ পক্ষের ভাড়াটে গুন্ডার লাঠির আঘাতেই তার মৃত্যু হয় বলে জানান তিনি।

এ মামলায় আত্মসমর্পণ করে স্থায়ী জামিনে আছেন জানিয়ে হারুন শেখ বলেন, ‘মারামারির সময় আমি বা আমার পরিবারের কেউ ঘটনাস্থলে ছিল না। তবুও আমাদের মামলার আসামি করা হয়েছে। সে সময় আক্কাস, সাখাওয়াত ও ওহাব শেখরা আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়, আমাদের মারধর করে। জীবন বাঁচাতে আমরা বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলে প্রতিপক্ষরা ৫ পরিবারের বসতবাড়িতে লুটপাট চালায়।’

তিনি বলেন, ‘আমি নির্দোষ, তাই আত্মসমর্পণ করেছি। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল; আইন আমাকে যে শাস্তি দেবে তা মাথা পেতে নেব। কিন্তু আমরা আমাদের নিজ নিজ বসতভিটায় শান্তিতে বসবাসের অধিকার চাই। নিজেদের জমিতে চাষাবাদের সুযোগ চাই।’

এ সময় ওই ৫ পরিবারের সব সদস্য ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর