সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে অংশীদারত্বে রূপান্তরের ওপর জোর দিয়েছেন।
আবুধাবিতে স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারত্বের জন্য কম্প্রিহেনসিভ ইকনোমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (সিইপিএ) স্বাক্ষর ও জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল (জেবিসি) সক্রিয় করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন।
সোয়া ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের শুরুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণপত্র শেখ আবদুল্লাহকে হস্তান্তর করেন।
এ সময় তিনি বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত দুই জাতির প্রতিষ্ঠাতা পিতাদের প্রতিষ্ঠিত দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের ঐতিহাসিক বন্ধনের কথা স্মরণ করে গত পাঁচ দশকে ইউএই’র অভূতপূর্ব অগ্রগতির জন্য আমিরাতের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসামান্য অর্জনগুলো তুলে ধরেন।
উভয় মন্ত্রী বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার পুরো বিষয় পর্যালোচনাকালে জ্বালানি নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধিসহ নতুন উদীয়মান ক্ষেত্র অন্বেষণের ওপর জোর দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান দেশে আমিরাতের বিনিয়োগ বৃদ্ধিকল্পে মাতারবাড়ি এক্সক্লুসিভ ইকনোমিক জোন, বন্দর ও লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা, চট্টগ্রামে হাছান মাহমুদের নিজ এলাকা রাঙ্গুনিয়ায় আধুনিক ইউএই’র প্রতিষ্ঠাতা শেখ জায়েদ ইবনে সুলতান আল নাহিয়ানকে উপহার দেয়া জমির উন্নয়নে আমিরাত সরকার এবং ব্যবসায়ীদের জন্য সম্ভাব্য বিনিয়োগ প্রস্তাব তুলে ধরেন। ইউএই’র পররাষ্ট্রমন্ত্রী এর সমর্থনে চলমান বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলোকে এগিয়ে নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
দুই নেতা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এবং চলমান গাজা যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগসহ নানা আঞ্চলিক বিষয়ে মতবিনিময় করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান ইউএইতে স্নাতক নার্স, কেয়ারগিভার, স্বাস্থ্যসেবা টেকনিশিয়ান, কৃষিবিদ, কৃষক ও বিভিন্ন পেশাজীবীসহ সব ট্রেডে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা পদ্ধতি সহজ করা এবং এক নিয়োগকর্তার কাছ থেকে অন্য নিয়োগকর্তার কাছে ওয়ার্ক পারমিট স্থানান্তর সহজীকরণের অনুরোধ জানালে আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইতিবাচক সাড়া দেন।
আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম এশিয়া শাখার মহাপরিচালক মো. শফিকুর রহমান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।