শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করে শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতির পাশাপাশি ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫’ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন পাঁচ শতাধিক গৃহকর্মী।
রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে মঙ্গলবার অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ-এর সুনীতি প্রকল্প আয়োজিত ‘গৃহকর্মী জাতীয় সম্মেলন-২০২৪’ শীর্ষক সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তারা।
‘সময় এখন গৃহকর্ম এবং গৃহকর্মীর’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচ শতাধিক গৃহকর্মীর অংশগ্রহণে আয়োজিত এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সংসদ সদস্য শিরীন আখতার। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আশিষ দামলে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিএসকের নির্বাহী পরিচালক ডা. দিবালোক সিংহ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. শামসুল আলম বলেন, ‘সরকার নানানভাবে দেশের উন্নয়ন করছে। গৃহকর্মীদের জন্যও এই সরকার সংবেদনশীল। তারই প্রমাণ ২০১৫ সালে গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি প্রণয়ন করা। আমি মনে করি এ যাবতকাল পর্যন্ত গৃহকর্মীরা নিগৃহীত শ্রেণির। তাদের ছুটিছাটা নেই। যেখানে রান্না করেন সেখানেই ঘুমান। তারা নির্যাতিত হন। এমনকি তাদের হত্যা পর্যন্ত করা হয়।
‘এই যে এই প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহকর্মীদের মানবেতর জীবন থেকে সুস্থ জীবনে নিয়ে আসা, সেটাও একটা মানবিক সংগ্রাম। গৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি ও শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তির দাবির সঙ্গে আমি একমত। গৃহকর্মী নীতি ঠিকভাবে মনিটরিং হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার দাবি এবং সুপারিশ, সংসদ অধিবেশনে এই নীতির বাস্তবায়ন নিয়ে বর্তমান শ্রমমন্ত্রী কথা বলবেন। শুধু তাই নয়, দেশে প্রায় ৪০ লাখ গৃহকর্মী রয়েছেন।
‘আসন্ন জাতীয় বাজেটে তাদের জন্য সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যায় কি না, দেখা যেতে পারে। সর্বশেষ গৃহকর্মী এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সন্তানদের মাধ্যমিক পর্যন্ত উপবৃত্তি প্রদান করা যায় কি না, ভাবতে হবে।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সংসদ সদস্য শিরীন আখতার বলেন, ‘গৃহকর্মীদের কোনো ছুটি নেই, কাজের নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই; নেই কোনো নিয়োগপত্র, স্বাস্থ্য সুবিধা এবং ন্যূনতম মজুরি।
‘গৃহকর্মীরা যৌন হয়রানিসহ নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে। তাদের সামাজিক মর্যাদা নেই এবং পেশা হিসেবে কাজের কোনো স্বীকৃতি নেই।’
ওই সময় নিজ অধিকার, বঞ্চনার পাশাপাশি সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন গৃহকর্মীদের একাধিক প্রতিনিধি।
তাদের বক্তব্যে ন্যূনতম মজুরি, কর্মক্ষেত্রে নির্যাতন, পর্যাপ্ত ছুটি না থাকার মতো বিষয় উঠে আসে।