বরিশাল-ভোলা মহাসড়কের টুঙ্গিবাড়িয়া এলাকায় একটি বেইলি ব্রিজ ভেঙে পড়েছে। এতে গুরুতর কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও দীর্ঘ ১২ ঘণ্টার বেশি সময় ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে থানা পুলিশ।
শনিবার রাত আড়াইটার দিকে লোহার কুচি ভর্তি ট্রাক ব্রিজের ওপর উঠলে সেটি ভেঙে খালে পড়ে যায়।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর থানার ওসি আব্দুর রহমান মুকুল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ব্রিজের ওপর উঠলে বরিশাল থেকে ভোলাগামী ট্রাকটি খালে পড়ে যায়। এতে ট্রাকের ভেতরে থাকা চালক ও হেলপার আহত হলেও তাদের কারও অবস্থা গুরুতর নয়।
ওসি বলেন, ‘রোববার সকালে সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন। তারা ব্রিজটি মেরামতের পাশাপাশি বিকল্প সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত বরিশাল-ভোলা রুটে যান চলচল বন্ধ থাকবে।’
স্থানীয়রা জানান, যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সড়কের উভয়প্রান্তে প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে পণ্য ও যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। মানুষকে পায়ে হেঁটে বিকল্প পথে খালটি পার হয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।
ট্রাকের চালক ও হেলপার জানান, বেনাপোল থেকে বরিশাল-ভোলা হয়ে চট্টগ্রাম যাওয়ার কথা ছিল ট্রাকটির, কিন্তু শনিবার রাত আড়াইটার দিকে টুঙ্গিবাড়িয়ার স্লুইজ গেট এলাকার বেইলি ব্রিজে উঠলে ব্রিজটি ভেঙে পড়ে। রড তৈরির কাঁচামালের ২৫ টন লোহার কুঁচিভর্তি করে ট্রাকটি ওই ব্রিজ পার হচ্ছিল।
তারা জানান, ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ায় ট্রাকটি উল্টে খালে পড়ে যায়। এতে অল্পের জন্যে প্রাণে বেঁচে যান তারা। তবে স্থানীয়রা তাৎক্ষনিক তাদের উদ্ধার করে।
টুঙ্গিবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান নাদিরা রহমান বলেন, ‘বেইলি ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় বরিশাল-ভোলা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। শত শত মানুষসহ এ পথ দিয়ে স্বল্প সময়ে সড়কপথে ভোলা, নোয়াখালী, ফেনীসহ চট্টগ্রামে যাতায়াত করেন যাত্রীরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, যেনতেনভাবে মাত্র এক মাস আগে ব্রিজটি তৈরি করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বেশকিছু দিন ধরে একাধিকবার বলা হলেও ব্রিজ মেরামতে উদ্যোগ নেয়া হয়নি বলে ক্ষোভ রয়েছে তাদের।
একই কথা জানিয়েছেন ওই রুটে চলাচলকারী ট্রাক, বাস ও ট্যাংক লরির চালক-হেলপাররাও। তাদের দাবি, সেতুটি দিয়ে কী পরিমাণ ওজনের যানবাহন চলাচল করতে পারবে, তারও নির্দেশনা দেয়া ছিল না; থাকলেও হয়ত ট্রাকটি ঝুকি নিত না।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমন দাবি করেছেন, ২০ টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন বেইলি ব্রিজটিতে অতিরিক্ত পণ্য ওঠাতেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
এদিকে সড়কটিতে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা দ্রুত করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপদ বিভাগ বরিশাল অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী একেএম আজাদ রহমান।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কর্মকর্তারা পরিদর্শনের পর ব্রিজটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে সেটিতে সময় লাগায় এখন বিকল্প অস্থায়ী সড়ক নির্মাণের কথা জানিয়েছেন তারা।
আর যারা ব্রিজটি সংস্কারের কাজে নিয়জিত তারা বলছেন, কমপক্ষে দুদিন লাগবে ব্রীজটি ঠিক করতে।