রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল ভবনে আগুনের ঘটনায় আরও তিনজনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ পর্যন্ত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে ৪৩ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
প্রাণ হারানো তিনজন হলেন কাস্টমস ইন্সপেক্টর শাহজালাল উদ্দিন, তার স্ত্রী মেহেরুন নেসা হেলালী এবং তাদের চার বছর বয়সী মেয়ে ফাইরুজ কাশেম জামিলা।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক একেএম হেদায়েতুল ইসলামের কাছ থেকে শনিবার সকালে মরদেহ বুঝে নেন মেহেরুন নেসার বাবা মোক্তার হোসেন হেলালী।
মোক্তার হোসেন বলেন, ‘আমার জামাতা দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের পোর্টে কাস্টমস ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার পুরো ফ্যামিলি নিয়ে খেতে যায় ওই রেস্টুরেন্টে। সেখানে আগুনের ঘটনায় তারা আর ফিরে আসতে পারেনি।’
এদিকে ছেলেকে হারিয়ে অনেকটা নির্বাক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও চিকিৎসক পিতা। তারপরও পাথরচাপা কষ্টে কথা বলেন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে।
শাহজালালের বাবা আবুল হাশেম বলেন, পাঁচ ভাই এক বোনের মধ্যে শাহজালাল উদ্দিন তৃতীয়। তিনি ২০১৭ সালে কাস্টমসের চাকরিতে যোগ দেন। নারায়ণগঞ্জ জেলার পানগাঁও কাস্টমস অফিসে কর্মরত ছিলেন তিনি। প্রতিদিন বাবার সঙ্গে তিন থেকে চারবার ফোনে কথা বলতেন। বৃদ্ধ বাবার চিকিৎসা ও ওষুধের জন্য তাড়া দিতেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার পর বাবার সঙ্গে সর্বশেষ কথা বলেছিলেন শাহজালাল উদ্দিন।
বাবা বলেন, ‘ছেলে আমাকে জানিয়েছিল, টানা তিন দিন ছুটি পাওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে খাগড়াছড়ি ভ্রমণে যাচ্ছে। এরপর থেকে আর কোনো ফোন পাইনি। আমি ধারণা করেছিলাম, ছেলেটা বউ ও নাতনিকে নিয়ে খাগড়াছড়ি গেছে।’
এই কথাগুলোই বলেন প্রাণ হারানো শাহজালালের ছোট ভাই হাশেম বিন লিংকন।
হাশেম বলেন, ‘বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পর কক্সবাজার কাস্টমস অফিসের ভাইয়ের এক সহকর্মী ফোন করে জানান ফেসবুকে অজ্ঞাত পরিচয়ে যে কয়েকজনের মরদেহ দেখা যাচ্ছে সেগুলোর মধ্যে তার ভাবী ও মেয়ের ছবি আছে। ভাইয়ের বিষয়টি জানেন না।
‘তারপর থেকে পরিবারের পক্ষে যোগাযোগ করার পর শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভাবীর বাবা মোক্তার হোসেন হেলালী ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে গিয়ে তিনজনের মরদেহ শনাক্ত করেন।’