নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ পাঁচ শিশুরই মৃত্যু হয়েছে। শনিবার ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও এর কারণ ছিল এতদিন অজানা। তবে পাঁচদিন পর অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানা গেছে।
সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণে নয়, ইচ্ছাকৃতভাবে সিলিন্ডারের গ্যাস ছেড়ে দেয়ায় এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বৃহস্পতিবার সকালে তিনি বলেন, ‘শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের মাঝে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিতরণের তারিখ ছিল। এর আগের দিন সকালে ৮১ নম্বর ক্লাস্টারের ২৪ বছর বয়সী সফি আলম নতুন সিলিন্ডার নিতে তার ব্যবহৃত সিলিন্ডারের তলানিতে থেকে যাওয়া গ্যাস ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেন। সেসময় পাশের কক্ষের আবদুস শুক্কুরের স্ত্রী আমিনা খাতুন এবং অপর কক্ষে আব্দুল হাকিমের মেয়ে রোমানা গ্যাসের চুলা জ্বালাতে দিয়াশলাই জ্বালালে ওই ছেড়ে দেয়া গ্যাস বাতাসে মিশে ৩, ৫, ৬, ৭ ও ৮ নম্বর কক্ষসহ বারান্দায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে পাঁচ শিশুসহ মোট নয়জন দগ্ধ হন।
তাদের উদ্ধার করে ভাসানচর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর মধ্যে গুরুতর সাতজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ পাঁচ শিশু ৫ বছরের রবি আলম, সোহেল, ৪ বছরের রাসেল এবং তিন বছরের মুবাশিরা ও রোমানার মৃত্যু হয়।
নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, ‘সাবধানতা অবলম্বন না করে অবহেলা করে সিলিন্ডার থেকে গ্যাস ছেড়ে দেয়ায় আগুনের সুত্রপাত হয়। এ ঘটনায় ৮১ নম্বর ক্লাস্টারের সফি আলমের বিরুদ্ধে ভাসানচর থানায় বুধবার রাতে মামলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘মামলার একমাত্র অভিযুক্ত সফি আলমের দুই শিশু সন্তানও এ ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।
‘তিনি নিজেও অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। তাকে ভাসানচর হাসপাতালে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সুস্থ হলে এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।’
প্রসঙ্গত, শনিবার সকালে হাতিয়া উপজেলার ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৮১ নম্বর ক্লাস্টারের একটি কক্ষে রান্নার চুলার গ্যাস সিলিন্ডার থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ৫ শিশুসহ ৯ জন দগ্ধ হন।
আহতদের প্রথমে নোয়াখালীর নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ৭ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠান।