বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নালিশ নিয়ে ইউএনও কার্যালয়ে সেই দম্পতি

  •    
  • ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১৭:৩৭

বৃদ্ধ আব্দুল হালিম বলেন, ‘ইউএনও স্যার যা প্রশ্ন করেছেন উত্তর দিয়েছি। চেয়ারম্যান আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে তালা দিলেন, হুমকি-ধমকি দিলেন- এসব বিষয় জানিয়ে নালিশ করেছি এবং বিচার চেয়েছি। তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।’

ঠাকুরগাঁওয়ে ভাড়া বাসা থেকে বের করে দিয়ে দরোজায় চেয়ারম্যানের তালা ঝুলিয়ে দেয়া ও নানামুখী ভয় দেখানোর ঘটনায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে নালিশ জানিয়েছেন বৃদ্ধ দম্পতি আব্দুল হালিম ও জোৎস্না বেগম।

অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান লিটন সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বে রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে দীর্ঘ সময় ধরে কার্যালয়ে বসে ওই বৃদ্ধ দম্পতির কথা শুনে আইন অনুযায়ী তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন ইউএনও মো. বেলায়েত হোসেন।

ইউএনওর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মৌখিকভাবে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নালিশ জানানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভুক্তভোগী ওই দম্পতি।

বৃদ্ধ দম্পতির ভাষ্যমতে, সম্প্রতি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পৌর শহরের দক্ষিণ সালন্দর শান্তিনগর এলাকায় স্কুল শিক্ষিকা ফারহানা ইসলাম কলির বাসায় ভাড়াটে হিসেবে ওঠেন তারা। কয়েকদিন পর ভোরের দিকে ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান লিটন তাদের ঘুম থেকে ডেকে তুলে টেনেহিঁচড়ে বাড়ির বাইরে বের করে দেন এবং বাড়ির দরোজায় তালা ঝুলিয়ে দেন।

জানা যায়, ওই বাড়ির জায়গা নিয়ে চেয়ারম্যানের লোকজন ও বাড়িওয়ালার মধ্যে বিরোধ রয়েছে।

গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে উপজেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। সেদিন ভুক্তভোগী দম্পতি জীবিকার তাগিদে অন্যত্র থাকায় তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি পরিদর্শনকারীদের। পরে তাদের দেখা করতে বলা হলে ওই বৃদ্ধ দম্পতি ইউএনওর কার্যালয়ে যান এবং তাদের সমস্যার কথা ইউএনও’র কাছে তুলে ধরেন।

ভাড়াটে বৃদ্ধ আব্দুল হালিম বলেন, ‘আমি এর আগেও ইউএনও স্যারের সঙ্গে দেখা করতে কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু স্যার সরকারি কাজে ব্যস্ত থাকায় দেখা করা সম্ভব হয়নি। আজ (বৃহস্পতিবার) দেখা করেছি। তিনি অনেকক্ষণ ধরে আমাদের কথা শুনেছেন।

‘স্যার আমাদের যা প্রশ্ন করেছেন সব উত্তর দিয়েছি। চেয়ারম্যান আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে তালা দিলেন, হুমকি-ধমকি দিলেন- এসব নালিশ করেছি ও বিচার চেয়েছি। এছাড়াও আমার ঘরের যেসব জিনিসপত্র চেয়ারম্যানের লোকজন সরিয়েছে সেসব জিনিস উদ্ধারের জন্য স্যারের সহযোগিতা চেয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘বলা হচ্ছে- আমার নিজস্ব বাসা ছেড়ে ভাড়া বাসায় কেন উঠেছি? আমি স্যারকে পরিষ্কার করেছি বিষয়টি। বলেছি, টাকার অভাবে আমি আমার মেয়ের বিয়ে দিতে পারছি না। বাড়ি বিক্রির জন্য আমি এক ব্যক্তির কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়েছি। কিন্তু বাড়ি খালি না করা পর্যন্ত ওই ব্যক্তি জমি রেজিস্ট্রি নিচ্ছে না।

‘তখন বাড়ি খালি করার জন্য আমি স্কুল শিক্ষিকাকে অনুরোধ করে বলি- তাদের তো অনেক জায়গা জমি, যেন আমাকে একটি থাকার ঘর তুলে দেন। আমি প্রতি মাসে ভাড়া দেব। তখন তিনি আমাকে তার জায়গায় দুটো ঘর তুলে দেন। এখন ওই জায়গা নিয়ে কারও সঙ্গে বিরোধ থাকলে এখানে আমাদের তো দোষ নেই। আমাদের থাকতে না দিলে থাকতাম না।’

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান লিটন। তিনি এর আগে গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘সেখানে স্থানীয়দের সঙ্গে জমিসংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে। আমি দুদিন সেখানে গিয়েছি। গণমাধ্যমকর্মীরাও গিয়েছিল।’

সে সময় তিনি বাড়ির দরোজায় তালা ঝুলানো ও হুমকি দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এদিকে ঘটনার পর ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন বাড়িওয়ালা স্কুল শিক্ষিকা ফারহানা ইসলাম কলি।

তিনি বলেন, ‘পুলিশ একাধিকবার ঘটনাস্থলে এসেছে। কিন্তু এখনও আমাদের এজাহার মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়নি। আইনের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা রয়েছে। নিশ্চয় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। সেখানে ইউএনও স্যারও পরিদর্শন করেছেন। মামলা নেয়ার মতো ঘটনা হলে আমরা মামলা নেব। আমরা তদন্ত করছি।’

ইউএনও মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘ওই বৃদ্ধ দম্পতি আজ (বৃহস্পতিবার) আমার কার্যালয়ে এসেছেন এবং আমি তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য আমার এখান থেকে যতদূর করা যায় করব।’

এ ঘটনায় জেলা প্রশাসককে একটি লিখিত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে এই সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার।

এ বিভাগের আরো খবর