কক্সবাজারের হিমছড়ি সমুদ্র সৈকতে ভেসে এসেছে একটি মৃত ইরাবতী ডলফিন। ডলফিনটি ৬ ফিট লম্বা ও প্রায় ১২০ কেজি ওজনের।
রোববার সকালে ইরাবতী ডলফিনটির সঙ্গে অন্য সৈকতে ভেসে আসে আরও ৪টি মৃত মা কচ্ছপ।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বোরি) জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের হিমছড়ি বিচে ৬ ফুট লম্বা, প্রায় ১২০ কেজি ওজনের একটি মৃত ইরাবতী ডলফিন ভেসে এসেছে। ডলফিনটির শরীরে তেমন কোনো আঘাতের চিহ্ন না থাকলেও পেছনের পাখনায় সামান্য আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।’
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউট মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করছে জানিয়ে এই বিজ্ঞানী বলেন, ‘মৃত ডলফিনটি সম্পর্কে বন বিভাগকে খবর দেয়া হয়েছে। তাদের জিম্মায় এটাকে পুঁতে ফেলা হবে।’
এছাড়া ডলফিনের পাশাপাশি টেকনাফের হাজমপাড়া ও কক্সবাজারের দরিয়ানগর সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসে চারটি মৃত মা কাছিম। কাছিমগুলো অলিভ রিডলি প্রজাতির।
এর আগে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কক্সবাজার শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণে সোনারপাড়া সৈকতে ও ২৬ কিমি দক্ষিণে পাটুয়ারটেক সৈকতে মৃত দুটি ডলফিন ভেসে আসে। ১৭ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দক্ষিণে হিমছড়ি সৈকতে একটি ডলফিন ও তার আগেরদিন শহরের সুগন্ধা পয়েন্ট সৈকতে একটি পরপইসের মরদেহ ভেসে এসেছিল।
২০১২ সালের বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে স্তন্যপায়ী ডলফিন, পরপইস ও সামুদ্রিক কচ্ছপ সংরক্ষিত প্রজাতি হিসেবে তালিকাভুক্ত। এগুলো শিকার করা, খাওয়া, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পরিবহন ও ক্রয়-বিক্রয় করা দণ্ডনীয় অপরাধ।
চলতি মৌসুমে কক্সবাজার শহর, রামু, উখিয়া, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন ও সোনাদিয়া সৈকতে অন্তত ৮৫টি মরা সামুদ্রিক কচ্ছপ ভেসে আসে বলে জানান সমুদ্রবিজ্ঞানীরা।
কিন্তু কী কারণে হঠাৎ করে কক্সবাজার বঙ্গোপসাগরে ডলফিনসহ এত সংরক্ষিত প্রাণী মারা যাচ্ছে, তা বিজ্ঞানীদের কাছে এখনও পরিষ্কার নয়। তবে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন বোরি মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ।
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে ফরেনসিক নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’
প্রাণীগুলোর আবাসস্থলে কোনো বড় ধরনের সমস্যা হয়েছে কি না, তাও অনুসন্ধান করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।