বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আগে ফুল দেয়া নিয়ে শহীদ মিনারে কুবি শিক্ষকদের হট্টগোল

  • প্রতিনিধি, কুমিল্লা ও কুবি   
  • ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ২৩:১১

২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ এফ এম আবদুল মঈন। এরপর শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, ছাত্রলীগ, কর্মকর্তা সমিতি ও কর্মচারী সমিতি ফুল দেয়। তারপর কোটবাড়ি পুলিশ ফাঁড়িকে ফুল দেয়ার অনুরোধ জানান উপস্থাপক। এতেই হট্টগোল বাঁধান শিক্ষক সমিতির নেতারা।

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শহীদ মিনারে ফুল দেয়া নিয়ে হট্টগোল করেছেন শিক্ষক নেতারা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে, ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ এফ এম আবদুল মঈন। এরপর শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, ছাত্রলীগ, কর্মকর্তা সমিতি ও কর্মচারী সমিতি ফুল দেয়। তারপর কোটবাড়ি পুলিশ ফাঁড়িকে ফুল দেয়ার অনুরোধ জানান উপস্থাপক নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক অমিত দত্ত। এতেই হট্টগোল বাঁধান শিক্ষক সমিতির নেতারা।

এ সময় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান এসে প্রথমে অমিত দত্তের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল বাকি থাকার পরও পুলিশকে ফুল দিতে অনুমতি দেয়ার কারণ জানতে চান এবং পরবর্তীতে একই প্রশ্ন রাখেন অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের কাছে।

অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘আমাদের ছাত্ররা ফুল দেয় নাই, আবাসিক হল ও বিভাগগুলোও ফুল দেয় নাই। এটা কোন ধরনের কালচার? তারা (পুলিশ) অবশ্যই ফুল দেবেন, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের পর ফুল দেবেন।’

অপরদিক থেকে অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন আঙুল তুলে বলেন, ‘এই আয়োজনের আহ্বায়ক কে? ওরে কান ধরে উঠবস করাও।’

এরপর তিনি অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের দিকে আঙুল তুলে বলেন, ‘আপনি হলের প্রভোস্ট ছিলেন না? আপনার লজ্জা করে না? আপনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের কাছে ক্ষমা চান।’

এরপর কুবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান বলেন, ‘আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অপমান করে বাইরের সংগঠনকে আনবেন। তারপর দোকান মালিক সমিতিকে আনবেন, ভূমিদস্যু আনবেন- এইসব আপনাদের কাজ? এইসব করার জন্য আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন? আপনাকে যদি কেউ নির্দেশ দিয়ে থাকে তাহলে তার নাম বলতে হবে।’

তখন আবার অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘প্রক্টর কোথায়? প্রক্টর বিষয়টা এড়াতে পারেন না।’

এরপর অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি শুরু থেকেই তাদের আগে দিতে রাজি হইনি।’

আহ্বায়কের এই কথা শুনে তখন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষকের মুখ থেকে শুনতে পাওয়া যায়, ‘তাহলে কার নির্দেশে এটা হয়েছে? আপনি কার নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অপমান করেছেন? এটা সবার সামনে বলতে হবে।’

প্রত্যুত্তরে অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক বলেন, ‘এটা নিয়ে আমরা আর তর্ক না করি। বিভাগ এবং হলগুলোর আগে তাদের (পুলিশ ফাঁড়ি) ফুল দেয়ার বিষয়ে আমাদের প্রশাসনিকভাবে ভুল হয়েছে। এই বিষয় নিয়ে আমরা পরবর্তীতে আলোচনা করব। এই মুহূর্তে এখানে এটা আলোচনার বিষয় নয়।’

এদিকে হট্টগোলের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে।

সেই ভিডিওতে দেখা যায়, মঞ্চের এক পাশে উপাচার্য ও প্রক্টর বসে আছেন। পাশে ছিলেন অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ড. মিজানুর রহমান।

একপর্যায়ে নবনির্বাচিত শিক্ষক সমিতির নেতারা চারপাশে ঘিরে ধরে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তারা জানতে চান, হলের ছাত্ররা আগে ফুল না দিয়ে কেন পুলিশকে সুযোগ দেয়া হলো? এ ঘটনায় উত্তেজিত শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. আবু তাহের অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটির আহ্বায়ককে ক্ষমা চাইতে বলেন।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসানকেও আঙ্গুল নাড়িয়ে উত্তেজিত হয়ে কথা বলতে দেখা যায় ভিডিওতে। উত্তেজিত দেখা যায় সমিতির সহ-সভাপতি কাজী মো. কামাল উদ্দিনকেও।

এ বিষয়ে নবনির্বাচিত শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, ‘পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক বড় বড় কর্মকর্তা আছেন, হলের ছাত্ররা আছেন। বিষয়টি শিক্ষক-ছাত্ররা আমাকে জানালে আমি নিজেও সামান্য উত্তেজিত হই।’

অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ সবসময় ডিউটিতে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বও পালন করে। তাই তাদের এক ফাঁকে সুযোগ দেয়া হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কোথাও এমন কিছু লেখা নেই যে, পুলিশ আগে ফুল দিতে পারবে না। তারা ফুল দিয়ে ডিউটিতে চলে যেতেন। তাদের সঙ্গে এমন আচরণ করা ঠিক হয়নি।’

এ বিভাগের আরো খবর