বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

একুশের প্রহর গুনছে বইমেলা

  •    
  • ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০৬

ভাষা শহিদ দিবস উপলক্ষ্যে শহিদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব শেষেই পরদিন সকালে জনতার ঢল নামবে অমর একুশে বইমেলায়। এই দিনটির জন্যই যেন অপেক্ষায় আছে একুশে বইমেলা এবং এতে অংশ নেয়া প্রকাশকেরা।

যে দিনটিকে কেন্দ্র করে ফেব্রুয়ারির পুরো মাসজুড়ে বাংলা একাডেমি বইমেলার আয়োজন করে, আজ রাত পোহালেই শুরু হবে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ভাষা শহিদ দিবস উপলক্ষ্যে শহিদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব শেষেই পরদিন সকালে জনতার ঢল নামবে অমর একুশে বইমেলায়। এই দিনটির জন্যই যেন অপেক্ষায় আছে একুশে বইমেলা এবং এতে অংশ নেয়া প্রকাশকেরা।

এদিন সকাল সাতটায় খুলে যাবে মেলার দুয়ার, খোলা থাকবে রাত ৯টা পর্যন্ত। পুরো মাসের মেলায় শুধু এই দিনই দীর্ঘ সময় অর্থাৎ ১৪ ঘণ্টা খোলা থাকে বইমেলার দুয়ার। ফলে স্বাভাবিকভাবেই পুরো মাসের মধ্যে এইদিনই সবচেয়ে ভালো বেচাবিক্রির প্রত্যাশা থাকে প্রকাশকদের।

বুধবার শহিদ বেদীতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকারসহ বিশিষ্ট ব্যাক্তিদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাত সাড়ে বারোটার পর থেকে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হবে শহিদ মিনার প্রাঙ্গণ। ওইদিন দুপুর পর্যন্ত চলতে থাকবে শ্রদ্ধা নিবেদন। ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শহিদ মিনারে ছুটে আসবে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে শহিদ মিনারে আসা হবে, অথচ সেই ভাষা শহিদদের জন্য পাওয়া মাতৃভাষার বইমেলায় যাওয়া হবে না, এটি তো হতে পারে না। তাই সবাই একবারের জন্য হলেও ঢুঁ মারবে অমর একুশে বইমেলায় আর গুনগুন করে গাইবে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি…’ গানটি। ফলে নিশ্চিতভাবেই কানায় কানায় পূর্ণ থাকবে বইমেলা প্রাঙ্গণ। লাইনে দাঁড়িয়ে মানুষ মেলায় প্রবেশ করবে, আড্ডা দেবে আর বই কিনবে।

ভাষা দিবসের দিন নিয়ে আশাবাদী ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টল ম্যানাজার আমজাদ হোসেন খানও। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এদিন সকাল সাতটা থেকে মেলা শুরু হয়ে চলবে রাত নয়টা পর্যন্ত। আমাদের মানসিকভাবে সেই প্রস্তুতিও আছে। যদিও এই দিন লোকসমাগমটা সাধারণত বিকেলেই হয়। যেহেতু মেলা জমজমাট হবে, তাই ভালো বিক্রিও হবে, আশা করি।’

তিনি বলেন, ‘সেদিন সবাই যে ভাষা আন্দোলন সংশ্লিষ্ট বই-ই কিনবেন, সেরকম নয়। ওইদিন মূলত বিক্রি বেশি হয়। পাঠকরা সব ধরনের বই-ই সেদিন কিনে থাকেন।’

মওলা ব্রাদার্সের স্টল ম্যানাজার শাহীন শিকদার বলেন, ‘আমরা প্রতিটা দিনই প্রস্তুত। তবে এই দিনটি যেহেতু বিশেষ, তাই প্রস্তুতিও একটু বিশেষভাবে থাকে। বিক্রির ক্ষেত্রে অবশ্য ভিড় অনুযায়ী বিক্রি হয় না। তারপরও এই দিনকে কেন্দ্র করেই যেহেতু বইমেলা, তাই আমাদের অপেক্ষা বলা যায় এই দিনের জন্যই।’

বইমেলায় বই দেখতে গিয়ে কথা হয় মিরপুর থেকে আসা রবিউল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আজকেসহ আমি দুইদিন মেলায় এসেছি। মেলায় এসে ভাষা আন্দোলন বা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নতুন কোনো বই প্রকাশ হয়েছে কি না, সেটি দেখছি আর এরকম নতুন কোনো বই থাকলে সেটি লিখে নিচ্ছি। আগামী বুধবার শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে এসব বই কিনে বাসায় যাবো।’

১৯তম দিনে মেলায় নতুন বই ১১৫টি

সোমবার মেলা শুরু হয় বিকেল তিনটায় এবং চলে রাত নয়টা পর্যন্ত। এদিন নতুন বই এসেছে ১১৫টি।

বিকেল চারটায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্মরণ: হাসান আজিজুল হক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মোজাফ্ফর হোসেন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ফারুক মঈনউদ্দীন এবং মহীবুল আজিজ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী।

প্রাবন্ধিক বলেন, ‘হাসান আজিজুল হক আখ্যানপ্রধান কথাসাহিত্যিক। বাংলা সাহিত্যের প্রচলিত গল্পের ধারাকে তিনি আরও সমৃদ্ধ ও সম্প্রসারিত করেছেন। এই বঙ্গে গণমানুষ ও প্রান্তিক মানুষ, দাঙ্গা, খরা, দুর্ভিক্ষ, ক্ষুধা, মুক্তিযুদ্ধ, রাঢ়বঙ্গের প্রকৃতি- এসবই তার ছোটোগল্পে চিত্রিত হয়েছে।’

আলোচকরা কথায় উঠে আসে, বাংলা ছোটোগল্পের অন্যতম প্রধান লেখক হাসান আজিজুল হক তার রচনায় রাঢ়বঙ্গের কঠিন বাস্তবতাকে তুলে ধরেছেন। মানুষের প্রতি তার মমত্ববোধ ঘেরা ছিল বাস্তবতার কঠিন আবরণে। তার একাধিক গল্পে শিশুকিশোর চরিত্রের সন্নিবেশ ঘটেছে, যেখানে তাদের মনোজগৎকে নানা মাত্রিকতায় আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছেন তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী বলেন, ‘বাংলা সাহিত্যের ছোটোগল্পের বরপুত্র হাসান আজিজুল হক গল্প-উপন্যাস ছাড়াও গভীর পর্যালোচনা ও প্রজ্ঞাসমৃদ্ধ প্রবন্ধ রচনা করেছেন। তার সাহিত্যের অনালোচিত দিকগুলোর ওপর আলোকপাত করার মাধ্যমে আমরা নিজেদের আরও সমৃদ্ধ করতে পারব।’

আজ ‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কথাসাহিত্যিক অসীম হিমেল, কবি গাজী রফিক, রম্যলেখক সত্যজিৎ বিশ্বাস এবং গবেষক জিয়াউল হক।

রিকশাচিত্র প্রদর্শন বই সংলাপ মঞ্চের আয়োজন

এই মঞ্চে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার সদ্যপ্রকাশিত কবিতা সংকলন মুজিবমঞ্জুষা নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বইয়ের প্রকাশক আগামী প্রকাশনীর প্রকাশক ওসমান গনিসহ বিশিষ্টজন।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, দুলাল সরকার, মাসুদ আলম বাবুল, কাজী আনারকলি, বাপ্পী রহমান এবং নাজমুল হুসাইন বিদ্যুৎ।

আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী আনজুমান আরা, বদরুল হুদা জেনু, মাহমুদুল হাকিম তানভীর, আওরঙ্গজেব আরু এবং রূপশ্রী চক্রবর্তী।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল শিল্পী ফরিদা পারভীনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘অচিন পাখি’, রাখাল কিশোর ঠাকুরের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ত্রিবেণী’ এবং আতিকুর রহমান উজ্জ্বলের পরিচালনায় নৃত্য সংগঠন নৃত্যাঙ্গনের পরিবেশনা।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন আবিদা রহমান সেতু, সোমা রাণী রায়, ডালিয়া সুলতানা, আরিফ চৌধুরী পলাশ, মুন্নী কাদের, রোমানা আক্তার, জোহুরা আক্তার সোনিয়া এবং মো. রেজাউল করিম।

আগামীকালের সময়সূচি

মঙ্গলবার মেলা শুরু হবে বিকেল তিনটায় এবং চলবে রাত নয়টা পর্যন্ত। বিকেল চারটায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘স্মরণ: জামাল নজরুল ইসলাম’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।

এ অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন আসিফ; আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন সুব্রত বড়ুয়া এবং আরশাদ মোমেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক আবদুল মান্নান।

এ বিভাগের আরো খবর