অভ্যন্তরীণ কোন্দলের মধ্যেই জাতীয় পার্টির জাতীয় কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা করেছেন দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ। এর আগে তিনি নিজেকে দলের চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
রোববার গুলশানে নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আগামী ৯ মার্চ জাতীয় পার্টির জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। দল এখন যে চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন তা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’
রওশন বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্র চর্চার প্রধান ক্ষেত্র হচ্ছে দলের নিয়মিত জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠান করা।
‘জাতীয় পার্টির কাউন্সিল আয়োজনের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। দলের নেতা-কর্মীদের দাবি অনুযায়ী আগামী মার্চে জাতীয় পার্টির দশম কাউন্সিল করার ঘোষণা দিচ্ছি।’
কাউন্সিল সফলভাবে সম্পন্ন করতে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন রওশন এরশাদ। এতে কাজী ফিরোজ রশীদকে আহ্বায়ক, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাকে সহ-আহ্বায়ক, গোলাম সারোয়ার মিলনকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সফিকুল ইসলাম সেন্টুকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
৭ জানুয়ারির নির্বাচন সামনে রেখে জাতীয় পার্টিতে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন নিয়ে নতুন ভাঙন দেখা দেয়।
একাদশ সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন রওশন এরশাদ। তবে এবার তার দেবর ও দলের প্রধান জিএম কাদেরের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে নির্বাচনে অংশ নেননি তিনি। দলটি রওশনের অনুগত কোনো নেতাকে মনোনয়ন দেয়নি বলেও জানা গেছে।
এ অবস্থায় রওশন একটি সফল কাউন্সিলের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির শক্তি ফিরিয়ে আনার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
আবু হোসেন বাবলাকে অব্যাহতি
এদিকে রওশনকে সমর্থন দেয়ায় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাকে দল থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
রওশনের কাউন্সিল করার ঘোষণার পরপরই জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাবলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান।
এর আগে জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব নিয়ে রওশন এরশাদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে দলের কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়সহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে দল থেকে সরিয়ে দেন জিএম কাদের।
এর আগে ২৮ জানুয়ারি রওশন এরশাদ নিজেকে দলের চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা দেন এবং দলের প্রধান ও মহাসচিবকে পদ থেকে অব্যাহতি দেন।
তিনি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী মামুনুর রশীদকে দলের মহাসচিব নিযুক্ত করেন।
সম্প্রতি গুলশানে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা দলের নেতাদের একাংশের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় রওশন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘চলমান সংকট থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে দলের নেতা-কর্মীদের অনুরোধে আমি দলের গঠনতন্ত্রের ২০-১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জিএম কাদেরকে চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে মুজিবুল হক চুন্নুকে অব্যাহতি দিচ্ছি।’