এনজিও’র মোড়কে একটি ‘হায় হায় কোম্পানি’ খুলে গ্রাহকের ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে বিদেশে পাড়ি জমানোর চেষ্টাকালে ওই তথাকথিত এনজিও’র মালিকসহ ছয়জন ধরা পড়েছে।
নওগাঁয় ‘ডলফিন সেভিংস অ্যান্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি খুলে গ্রাহকের প্রায় ২০ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা ছিলেন এর উদ্যোক্তা আব্দুর রাজ্জাক। টাকাগুলো নিয়ে দুবাইগামী বিমানে তিনি দেশের বাইরে পাড়ি জমানোর পরিকল্পনা করছিলেন।
রোববার নওগাঁ সার্কিট হাউজে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস। এর আগে শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার তারাব বাসস্ট্যান্ড এবং নওগাঁর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
রোববার নওগাঁ সার্কিট হাউজে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস। ছবি: নিউজবাংলা
আটক ছয়জন হলেন- নওগাঁর ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক, তার স্ত্রী সুমি বেগম, আব্দুল মজিদের ছেলে রিপন, রজাকপুরের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে পিয়ার আলী ও তার স্ত্রী শিল্পি বেগম এবং ইকরতারা এলাকার লায়ের উদ্দিনের ছেলে আতোয়ার রহমান আতা।
সংবাদ সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, ‘র্যাব জানতে পারে যে আব্দুর রাজ্জাক ২০১৩ সালে ফতেপুর বাজারে ডলফিন নামে একটি সংস্থা গড়ে তোলেন। এরপর গ্রামের সহজ-সরল মানুষকে প্রতি মাসে এনজিও থেকে অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ২০ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেন।
‘তাদের প্রলোভনে ওই এনজিওতে এলাকার অনেকেই বড় অংকের টাকা জমা করেন। প্রথম তিন মাস গ্রাহকরা জমানো টাকার মুনাফা পেলেও পরবর্তীতে মুনাফা দেয়া বন্ধ হয়ে যায়।’
র্যাব-৫ অধিনায়ক জানান, এক পর্যায়ে সংস্থাটির পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক অফিসে তালা ঝুলিয়ে তিন শতাধিক গ্রাহকের ২০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যান। খবর পেয়ে র্যাব-৫ ও র্যাব-১১ এর গোয়েন্দা দল মাঠে নামে। শুরু হয় অভিযুক্তদের ওপর নজরদারি।
একপর্যায়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ থেকে আব্দুর রাজ্জাককে আটক করা হয়। তিনি টাকাগুলো নিয়ে দুবাইগামী বিমানে দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। পরে রাজ্জাকের বোন, স্ত্রী, এনজিওর সভাপতি, ম্যানেজার ও ক্যাশিয়ারকে নওগাঁর বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুর রাজ্জাক স্বীকার করেছেন যে টাকা নিয়ে দুবাই পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, আটককৃতরা এক লাখ টাকায় মাসিক দুই হাজার টাকা লাভ দেয়ার কথা বলে এলাকার তিন শতাধিক ব্যক্তিকে ওই এনজিওতে সঞ্চয় রাখার ব্যাপারে উৎসাহিত করেছিলেন।
তাদেরকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নওগাঁ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এর আগে এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানায় মামলা করেন।