মিয়ানমারে সামরিক জান্তার বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের গোলাগুলি ও সংঘর্ষের কারণে দেশটির রোহিঙ্গারা নাফ নদী দিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে ঢোকার চেষ্টা করছে।
তবে রোহিঙ্গাদের সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি ও কোস্টগার্ড।
টেকনাফ সীমান্তে শনিবার সরেজমিনে কথা হয় ওই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে।
কক্সবাজার টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের মাঝি আবু বক্কর বলেন, ‘মিয়ানমারের সাগরের তীরে হাজার হাজার রোহিঙ্গার অবস্থান দেখা গেছে। কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫টি রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা দেখা যায়। সে সব নৌকায় করে এই পাড়ে ঢোকার চেষ্টা করে যাচ্ছে তারা, কিন্তু বিজিবি ও কোস্টগার্ডের ভয়ে তারা অনুপ্রবেশ করতে পারছে না।’
স্থানীয় জেলে কবির আহমেদ বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের এলাকায় আরকান আর্মি ঢুকে পড়েছে। এতে সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়ায় তাদের অন্য জায়গায় আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। তাই কয়েক হাজার রোহিঙ্গা প্রাণে বাঁচতে বিলে, সাগরের তীরে আশ্রয় নিয়েছে।
‘তারা কোন মুহূর্তে নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করবে জানি না। রাতের বেলায় তারা শাহপরীর দ্বীপসহ বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশ করতে পারে, তবে তাদের ঠেকিয়ে রাখছে বিজিবি ও কোস্টগার্ড।’
এদিকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে টেকনাফ সীমান্তের হ্নীলা, সাবরাং ও সেন্টমার্টিনের নাফ নদীর বিপরীতে মিয়ানমার সীমান্তে। প্রতি দিনই এসব এলাকায় গোলাগুলি-মর্টার শেলের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।
মিয়ানমার মংডুর সিকদার পাড়ার রোহিঙ্গা সেলিম বলেন, ‘আমাদের তিনটি গ্রাম ধ্বংস হয়ে গেছে, আমরা প্রাণে বাঁচতে বাড়ি ঘর ছেড়ে চরে আশ্রয় নিয়েছি। সাগরে বাংলাদেশের বাহিনী বেশি থাকায় সেখানে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না, তবে আমরা চেষ্টা করব সেখানে ঢোকার নাইলে আমরা বাঁচতে পারব না।’
‘হেলিকপ্টার থেকে বোমা মারতেছে। আমাদের কয়েকটি গ্রাম থেকে গোলাগুলি হচ্ছে, গ্রাম গুলো হচ্ছে, মংডু কাদিরবিল, নুরুল্যাহ পাড়া, বাগগুনা, নর বাইন্যা, থানাশো। এসব এলাকা থেকে রোহিঙ্গা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে।’
এ বিষয়ে টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশ জলসীমাজুড়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক স্পিড বোট দিয়ে টহল দেয়া হয়। কোনো অনুপ্রবেশকারীকে ঢুকতে দেয়া হবে না।’