দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পর বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার রাশিয়ার। ২০২৩ সালের জানুয়ারি-নভেম্বরে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৩০০ কোটি ডলার।
ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মানতিৎস্কি বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘ডিক্যাব টকে’ এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-রাশিয়া সম্পর্ক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে দৃঢ় ও শক্তিশালী প্রমাণিত হয়েছে। ২০২৪ সালটিও সমানভাবে আশাব্যঞ্জক বলে মনে হচ্ছে।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশি অংশীদারদের সঙ্গে একত্রে আমরা দুই দেশের জনগণের স্বার্থে পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলো সম্প্রসারণ ও বৈচিত্র্যময় করতে আগ্রহী।
রাশিয়া রেলপথ, সড়ক নির্মাণ, ভবন, ধাতুবিদ্যা এবং অন্যান্য শিল্প ক্ষেত্রের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সরবরাহের মাধ্যমে নিজেদের রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্যকরণ করতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তায় রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। পশ্চিমা দেশগুলোর কৃত্রিম ও বিপরীতমুখী প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও মস্কো বাংলাদেশে প্রধান কৃষি-শিল্পজাত পণ্য, প্রধানত গম ও সার রপ্তানি অব্যাহত রেখেছে।
‘বাংলাদেশ ২০২৩ সালে রাশিয়া থেকে ২৭ মিলিয়ন টন শস্য আমদানি করেছে। রাশিয়ার পক্ষ থেকে ভোজ্যতেল, মটরশুঁটি, ছোলা ও মসুর ডাল দিয়ে রপ্তানি পণ্যের তালিকা বৃদ্ধির জন্য প্রস্তুতি রয়েছে।’
রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমাদের সহযোগিতার মেরুদণ্ড হলো জ্বালানি। ২০২৩ সালেও বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে প্রকল্প অব্যাহত রেখেছে গ্যাজপ্রম।
‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প শিডিউল অনুযায়ী এগিয়ে চলছে। ইউনিট-২ এ প্যাসিভ তাপ অপসারণ সিস্টেমের ইনস্টলেশন রয়েছে। প্রথম ইউনিটটি এ বছরের শেষের দিকে পরীক্ষামূলক অপারেশন শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ চুক্তি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জ্বালানি নিরাপত্তায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।
‘রাশিয়া পরমাণু প্রকল্পের পুরো জীবনচক্রে বাংলাদেশি অংশীদারদের সহায়তা করবে- যার মধ্যে রয়েছে চুল্লির জ্বালানির দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ, প্ল্যান্ট রক্ষণাবেক্ষণ এবং পারমাণবিক বর্জ্য পরিচালনার জন্য আমাদের বাধ্যবাধকতা।
‘তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, কিছু পশ্চিমাপন্থী মহল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পকে কলঙ্কিত করার পরিকল্পনা করছে।
‘অর্জনগুলোর দিকে মনোনিবেশ করার পরিবর্তে স্থানীয় সুযোগ-সন্ধানী সাংবাদিকরা স্বল্পস্থায়ী বিবেচনার জন্য আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রতীককে ক্ষুণ্ন করতে প্রস্তুত। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে এ ধরনের কোনো প্রকল্পে অনিবার্য ছোটখাটো ত্রুটিগুলোকে অতিরঞ্জিত করে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ডিক্যাব সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিব ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অপু।