পরিবারের অভাব ঘোচাতে প্রবাসে গিয়ে অন্য ব্যক্তিকে বিয়ে করে টাকা পাঠানো বন্ধ করলেন মা। এ ঘটনার জেরে ও সংসারে অভাব-অনটনের কারণে স্কুলপড়ুয়া ৯ বছরের শিশুপুত্রকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মানিকগঞ্জের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মহিন মিয়া নামের ওই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের ভাড়ারিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অগ্নিদগ্ধ তুহিন মিয়া স্থানীয় একটি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয়রা জানান, সংসারে অভাব-অনটনের কারণে সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে বছরখানেক আগে সৌদি আরবে যান মহিন মিয়ার স্ত্রী। কাজের সুবাদে সেখানে এক পুরুষের সঙ্গে তার সম্পর্ক তৈরি হয় এবং পরে তারা বিয়ে করেন। তারপর থেকে সংসারে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেন মহিন মিয়ার স্ত্রী।
সংসারে টাকার সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় পিতা-পুত্রের মধ্যে অশান্তির সৃষ্টি হয় এবং অভাব-অনটনের কারণে মাঝেমধ্যেই মহিন মিয়া তার ছেলে তুহিনকে মারধর করেন। প্রতিবেশিরা এগিয়ে গেলে তাদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করেন তিনি।
মহিনের প্রতিবেশি লিপি আক্তার জানান, ‘স্ত্রী অন্য লোকের সঙ্গে বিয়ে করা ও সংসারে অভাব-অনটনের কারণে ছেলে তুহিনের শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন মহিন মিয়া। ছেলেটা শরীরে আগুন নিয়ে চিৎকার করতে করতে দৌঁড়িয়ে আমার বাড়িতে আসলে পানি দিয়ে শরীরের আগুন নেভাই।’
তিনি বলেন, ‘ছেলের শরীরের আগুন নেভানোর জন্য আমার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে গেছে মাহিন মিয়া। বাড়ি গিয়ে তার ছেলেটার স্কুলড্রেস ও বইখাতাও পুড়িয়ে ফেলে।’
এরপর প্রতিবেশি ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে মহিন মিয়াকে আটকে বেঁধে রেখে পুলিশকে খবর দেয় বলে জানান লিপি আক্তার।
মানিকগঞ্জ থানার ওসি মো. হাবিল হোসেন জানান, স্থানীয় দগ্ধ অবস্থায় তুহিন মিয়াকে প্রথমে হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়।
‘মহিন মিয়াকে আটক করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশের হেফাজতে শিশু তুহিনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’
পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, আগুনে তুহিনের মুখমণ্ডল, মাথা ও শরীরের অনেকটা অংশ ঝলসে গেছে। তার বাবা মহিন মিয়ার হাত ও শরীর ঝলসে গেছে বলেও জানান ওসি।