পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় বিগত বছরগুলোর মতো এবারও বপন করা হয়েছে শীতপ্রধান অঞ্চলের বসন্তকালীন ফুল টিউলিপের বীজ, যার সৌন্দর্যে আরেকবার হেসে উঠেছে দেশের সর্বউত্তরের উপজেলা।
পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) আর্থিক সহযোগিতায় দুই বছর আগে তেঁতুলিয়ায় পরীক্ষামূলকভাবে টিউলিপ চাষের উদ্যোগ নেয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইএসডিও।
সংস্থাটির উদ্যোগে গড়ে ওঠা টিউলিপ বাগানে বাহারি ফুলটি দেখতে তেঁতুলিয়ায় ছুটে যান হাজারো পর্যটক। এ ফুল বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হন চাষিরা।
এমন সুখকর অভিজ্ঞতার কারণে এবার আরও বড় পরিসরে টিউলিপ চাষের উদ্যোগ নেন উপজেলার দর্জিপাড়া এলাকার ২০ নারী উদ্যোক্তা।
ইএসডিওর ডেপুটি প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর আইনুল হক জানান, এবার ২০ নারী উদ্যোক্তা এক একর জমিতে টিউলিপ চাষ করছেন। এরই মধ্যে ফুটতে শুরু করেছে ফুল। এবার প্রায় ২৫ হাজার টিউলিপ ফুটবে তেঁতুলিয়ায়, যা নেদারল্যান্ডস ও কাশ্মীরের মতোই সৌন্দর্য ছড়াবে।
তিনি জানান, পিকেএসএফের আর্থিক সহযোগিতায় টিউলিপকেন্দ্রিক নানা উদ্যোগও নেয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে অ্যাগ্রো ট্যুরিজম। দর্জিপাড়ায় পর্যটকরা টিউলিপের সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি যাতে অর্গানিক খাবার খেয়ে গ্রামীণ পরিবেশ উদযাপন করতে পারেন, সে জন্য কয়েকটি বাড়ি প্রস্তুত করা হয়েছে।
এ কর্মকর্তা আরও জানান, এক একর জমিতে ২৫ হাজার চারা বা বাল্ব রোপণ করা হয়। এ ফুল বিক্রির জন্য নেয়া হয় নানা উদ্যোগ।
তেঁতুলিয়ার বাগানে এ বছর ১৯ প্রজাতির টিউলিপ সৌন্দর্য ছড়াবে।
উদ্যোক্তা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘গত বছর আমরা প্রান্তিক আটজন নারী মিলে এ অঞ্চলে নেদারল্যান্ডসের রাজকীয় টিউলিপ ফুটিয়েছিলাম। এ অঞ্চলে টিউলিপ চাষ করে আমরা যেমন সফল হয়েছিলাম, তেমনি আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছিলাম।
‘এ ছাড়া টিউলিপ ফুল দেখতে এ অঞ্চলে প্রচুর পর্যটকের সমাগম ঘটেছিল। আশা করছি এবারও টিউলিপের দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য ও হাসি সবাইকে মুগ্ধ করবে।’
উদ্যোক্তারা জানান, টিউলিপ চাষ করতে সর্বোচ্চ ১৯ ও সর্বনিম্ন ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রয়োজন। বেশির ভাগ সময় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকা তেঁতুলিয়া এ ফুল চাষের জন্য উপযোগী।