নোয়াখালীর ভাসানচরের বাসিন্দা হলেন আরও ১ হাজার ৫২৭ জন রোহিঙ্গা। কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন আশ্রয় শিবির থেকে তাদেরকে ভাসানচর আশ্রয়ণ কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। একইসঙ্গে ভাসানচর আশ্রয়ণ কেন্দ্র থেকে কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে বেড়াতে যাওয়া ৬৪০ রোহিঙ্গাও ফিরে এসেছেন।
বুধবার চট্টগ্রাম বোটক্লাব জেটি থেকে নৌবাহিনীর পাঁচটি জাহাজে বেলা সাড়ে ১১টায় রওয়ানা হয়ে বিকেল সাড়ে ৩টায় এসব রোহিঙ্গা ভাসানচরে পৌঁছান।
কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তরে এটি ছিল ২৩তম দফা। এর আগে ২২ দফায় কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ৩২ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন শিবির থেকে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে আসতে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের মঙ্গলবার রাতে বাসে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা জেটিতে আনা হয়। ২৩তম দফায় মোট দুই হাজার ১৬৭ জন রোহিঙ্গা চট্টগ্রাম বোটক্লাব জেটি থেকে নৌবাহিনীর পাঁচটি জাহাজে রওয়ানা হয়ে ভাসানচর ঘাটে পৌঁছান। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৫২৭ জন নতুন এবং ৬৪০ জন ‘গো অ্যান্ড সি ভিজিট’-এর আওতায় ভাসানচর থকে কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। ভাসানচর ঘাট থেকে তাদের জন্য নির্দিষ্ট ক্লাস্টারের ঘরে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।’
হাতিয়ায় মেঘনা নদীর বুকে জেগে ওঠা দ্বীপ ভাসানচরে ২০১৯ সালের ১৯ এপ্রিল রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ শেষ হয়। ওই বছরের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন হওয়ার কথা থাকলেও আগেই শেষ হয় সব অবকাঠামো নির্মাণ।
হাতিয়া থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে ১৩ হাজার বর্গকিলোমিটারের এই দ্বীপের আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১২০টি গুচ্ছগ্রাম রয়েছে। এতে ১ লাখ রোহিঙ্গা বাস করতে পারবে।
নোয়াখালীর এই দ্বীপটি বাস উপযোগী করা, অবকাঠামো উন্নয়ন, বনায়ন ও নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে।
আধুনিক বাসস্থান ছাড়াও রোহিঙ্গাদের জন্য এখানে বেসামরিক প্রশাসনের প্রশাসনিক ও আবাসিক ভবন, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার ভবন, মসজিদ, স্কুল, হাসপাতাল, ক্লিনিক ও খেলার মাঠ গড়ে তোলা হয়েছে।