বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গভীর রাতে গ্রামটিতে বাইকের শব্দ, কিছুক্ষণ পরই লাগছে আগুন

  • প্রতিনিধি,কুড়িগ্রাম   
  • ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১১:৩৮

নাগেশ্বরী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিলি ডিফেন্স স্টেশনের অফিসার ইমন মিয়া বলেন, বেশির ভাগ আগুন লাগার ঘটনায় আগুনের উৎস পাওয়া গেলেও গভীর রাতে খড়ের গাদায় আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত উপজেলায় ৩৫টি অগ্নিসংযোগের ঘটনার মধ্যে ২৪টি বাড়ির আঙ্গিনায় থাকা খড়ের গাদায় লেগেছে।

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে একই গ্রামে একাধিক আগুনের ঘটনায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গভীর রাতে একটি মোটরসাইকেলের শব্দ শোনার পরই বেশ কিছুদিন ধরে ঘটছে এমন আগুন লাগার ঘটনা।

বেশির ভাগ আগুনের উৎস পাওয়া গেলেও এর কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দায়ীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসী।

নাগেশ্বরী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাঘডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা গহুরন বেগম। তার গো-খাদ্য রাখা খড়ের গাদায় গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাত ৩টার দিকে আকষ্মিকভাবে আগুন লেগে পুড়ে যায়। তার মতো আব্দুর রহিমের বাড়ির রান্না ঘরে এক সপ্তাহে তিনবার আগুন লাগার ঘটনা ঘঠেছে গভীর রাতে।

স্থানীয়রা জানান, গত দেড় মাসে শুধু ওই গ্রামে ১০-১২টির অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গ্রামটিতে গভীর রাতে বাসিন্দাদের গো-খাদ্য রাখা খড়ের গাদা কিংবা রান্না ঘরে হঠাৎ করে আগুন জ্বলে উঠছে। বেশির ভাগ আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে বাড়ির আঙ্গিনায় থাকা খড়ের গাদায়। বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আগেই প্রতিবেশী এবং ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নেভাতে সক্ষম হলেও আগুন লাগার উৎস থেকে যাচ্ছে অন্তরালে।

রহস্য ঘেরা এসব আগুনের ঘটনা ঠেকাতে রাত জেগে গ্রামের মানুষ পাহাড়া দিলেও প্রতিকার মিলছে না। ফলে আগুন আতঙ্কে দিন কাটছে গ্রামের মানুষের।

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রতিটি আগুন লাগার ঘটনার আগে একটি মোটরসাইকেলের শব্দ পাওয়া যায়। এই মোটরসাইকেল চলে যাওয়ার পর পরই আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।

সর্বশেষ ১২ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে আব্দুর রহিম মিয়ার রান্না ঘরের চালে আগুন লাগে। ১০ ফেব্রুয়ারি আব্দুল খালেকের খড়ের গাদায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া একই গ্রামের ইউসুফ আলী, ফজলুল হক, নজরুল ইসলাম, সৈয়দ আলী, মজিদ মিয়াসহ দেড় মাসে ১০-১২টি খড়ের গাদায় আগুন লাগে। কে বা কারা আগুন দিচ্ছে রাত জেগে পাহারা দিয়েও তাদের ধরতে পারছে না গ্রামবাসী

বাঘডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহিম বলেন, প্রায় দেড় মাসে আমাদের এখানে ১০-১২টি বাড়ি আঙ্গিনায় খড়ের গাদায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এই বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হলেও কোন লাভ হয়নি। আমরা এখন গ্রামের প্রতিটি বাড়ির লোকজন রাত জেগে পাহারা দিয়েও কাউকে ধরতে পারছি না। এক সপ্তাহে তিনবার আমাদের বাড়ির রান্না ঘরে রাত ২-৩টার দিকে কে বা কারা আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু আমাদের সাথে কারও কোনো বিবাদ নেই। আগুন লাগিয়ে দেয়ার কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।

গহুরন বেগম বলেন, বাড়ির আঙ্গিনাতে গরুর খাবার রাখা খড়ের গাদায় ৩-৪টার দিকে কে যে এসে আগুন দিলেও কিছু বুঝতে পারছি না। হঠাৎ আগুনে পোড়ার শব্দে বাড়ির লোকজন, গ্রামবাসী এবং ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিভেয়েছে। এখন আমরা পরিবার নিয়ে প্রতি রাত দুশ্চিন্তা আর ভয়ে কাটাচ্ছি।

নজরুল ইসলাম বলেন, গ্রামের কোনো পরিবারের সাথে কারও কোন বিবাদ নেই। গভীর রাতে একটি মোটরসাইকেলের শব্দ পাওয়া যায়। এরপর কিছুক্ষণ পরেই আগুন লাগার ঘটনা ঘটতেছে। গ্রামের প্রতিটি মানুষ এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

মজিদ মিয়া বলেন, গ্রামের শান্তি ও সৌহার্দ্য সম্পর্ক নষ্ট করতে কে বা কারা আতঙ্ক ছড়ানো উদ্দেশে এমন ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে নিয়মিত। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবী সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীকে ধরে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক।

নাগেশ্বরী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিলি ডিফেন্স স্টেশনের অফিসার ইমন মিয়া বলেন, বেশির ভাগ আগুন লাগার ঘটনায় আগুনের উৎস পাওয়া গেলেও গভীর রাতে খড়ের গাদায় আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত উপজেলায় ৩৫টি অগ্নিসংযোগের ঘটনার মধ্যে ২৪টি বাড়ির আঙ্গিনায় থাকা খড়ের গাদায় লেগেছে।

এ বিভাগের আরো খবর