ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে অভিযোগ দিলেন আলোচিত মুশতাক-তিশা দম্পতি। সোমবার সন্ধ্যার দিকে তারা রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে যান। এ সময় ডিবির এক কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অভিযোগ দেন তারা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিবির আরেক কর্মকর্তা।
আলোচিত খন্দকার মুশতাক আহমেদ ও সিনথিয়া ইসলাম তিশা দম্পতি এর আগে নিরাপত্তা চেয়ে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন।
ডিবি জানায়, এই দম্পতি ডিবি কার্যালয়ে এসে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা এ সময় নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়ে কথা বলেন ডিবি প্রধানের সঙ্গে।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অমর একুশে বইমেলায় স্ত্রীকে নিয়ে নিজের লেখা বইয়ের প্রচারে যান মুশতাক। এক পর্যায়ে পাঠক, ক্রেতা ও দর্শনার্থীর ক্ষোভের মুখে পড়েন এই দম্পতি। দুয়োধ্বনি দিয়ে তাদের বইমেলা প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য করা হয়। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই দম্পতির অসম বয়সসীমা নিয়েও কটাক্ষ করা হয়। গুলি করে হত্যার হুমকির অভিযোগও করেছেন এই দম্পতি।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার বইমেলায় মিজান পাবলিশার্সে। এই প্রকাশনীতে ছিল মুশতাকের লেখা বই ‘তিশার ভালোবাসা’ ও ‘তিশা অ্যান্ড মুশতাক’। তাদের দেখে রীতিমতো ভিড় জমান মেলায় আসা অনেকে। মুশতাক-তিশা দম্পতি তখন ‘তিশার ভালোবাসা’ বইটি হাতে নিয়ে পাঠকদের কিনতে উৎসাহিত করছিলেন। এ সময় একদল ক্রেতা-দর্শনার্থী তাদের তাড়া করেন। তাদের উদ্দেশে ‘ভুয়া ভুয়া’ ও ‘ছি ছি ছি ছি’ দুয়োধ্বনি দেন।
পরে মেলা প্রাঙ্গণে থাকা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এই দম্পতিকে নিরাপদে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের গেট দিয়ে মেলা প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে যেতে সাহায্য করেন।
এ ঘটনায় পরদিন শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে শাহবাগ থানায় গিয়ে জিডি করেন আলোচিত এই দম্পতি।
মুশতাক-তিশাকে বইমেলা প্রাঙ্গণ থেকে বের করে দেয়ার বিষয়ে মেলায় আসা পাঠক, ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের অনেকের অভিব্যক্তি, এই দম্পতি বাংলাদেশের সামাজিক সংস্কৃতির জন্য লজ্জাজনক উদাহরণ। তাদের কাছ থেকে তরুণ প্রজন্মের ভালো কিছু শেখার নেই। মুশতাকের লেখা পড়ে তরুণ-তরুণীরা বিপথগামী হতে পারে।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ একই কলেজের শিক্ষার্থী সিনথিয়া ইসলাম তিশাকে বিয়ে করেন। বয়স বিবেচনায় তাদের এই অসম বিয়ে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়।
যদিও শুরু থেকে এই দম্পতি জানান, তারা পরস্পরকে ভালোবেসে বিয়ে করেছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এসব প্রসঙ্গে ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।