বাংলাদেশ ও ভারতের নৌ প্রটোকলের আওতায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে প্রায় ছয় দশক পর চালু হলো রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ মায়া নৌবন্দরে নৌ চলাচল।
নৌ প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী সোমবার সকাল ১১ টার দিকে রাজশাহী গোদাগাড়ী উপজেলার সুলতানগঞ্জ বন্ধরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
প্রথম দিন সকালে সুলতানগঞ্জ থেকে ১০ টন তুলা নিয়ে একটি ট্রলার যায় ভারতের মায়া বন্দরে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই বন্দরটি চালুর ফলে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে। বাণিজ্যে আসবে গতিশীলতা। বন্দরটি চালুর ফলে দুই দেশে দূরত্ব কমবে ১২০ কিলোমিটার।
বাংলাদেশ ও ভারতের প্রতিনিধিরা বলছেন, এ বন্দর চালুর ফলে শুধু দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কই নয় আরও সুদৃহ হবে দুই দেশের বন্ধুত্বের সম্পর্ক।
এসময় রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের ধূলিয়ান থেকে নৌপথটি গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ, রাজশাহী ও পাকশী হয়ে আরিচাঘাট পর্যন্ত গেছে। দীর্ঘদিন এটির ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ ছিল না। আমি গত পাঁচ বছর বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া, লেখালেখি ও ডিও লেটার দিয়েছি। ফলে এটা গতিশীল হয়েছে।
‘অবশেষে প্রথম পর্যায়ে সুলতানগঞ্জ-মায়া নৌপথে নৌযান চলাচল শুরু হলো। পরবর্তীতে এটি রাজশাহী হয়ে আরিচা পর্যন্ত চালু হবে। রাজশাহী নগরীতে নৌবন্দর স্থাপন করা হবে। এর মাধ্যমে রাজশাহীর অর্থনীতি গতিশীল হবে, অনেক কর্মসংস্থান হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আজ অত্যন্ত আনন্দিত। পিছিয়ে পড়া রাজশাহীতে নৌবন্দর চালু হলো। এটির মাধ্যমে রাজশাহীর ব্যবসা বাণিজ্য বাড়বে।’
নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আগ পর্যন্ত সুলতানগঞ্জ-ময়া ও গোদাগাড়ী-ভারতের লালগোলার মধ্যে নৌপথে বাণিজ্য কার্যক্রম চালু ছিল, যা যুদ্ধের সময় বন্ধ করে দেয়া হয়।
এত বছর পর নৌ প্রটোকল চুক্তির আওতায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর উদ্বোধনের বিষয়টি চূড়ান্ত করে। বাংলাদেশের পদ্মা-মহানন্দার মোহনায় চালু হলো এ রুট। আপাতত প্রতিদিন এ রুট দিয়ে পাঁচটি জাহাজ আসবে। পরে এটি বাড়ানো হবে। এ রুটে দূরত্ব মাত্র ১৭ কিলোমিটার। তাই খরচও কমবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহনের (বিআইডব্লিউটিএ) তথ্য অনুযায়ী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভায় রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ আর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ধুলিয়ান নৌরুটে বাণিজ্য চালুর সিদ্ধান্ত হয়। রাজশাহী থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান পর্যন্ত ৭৮ কিলোমিটার একটি নৌপথের অনুমোদন থাকলেও পদ্মার নাব্য সংকটের কারণে কার্যকর করা হয়নি।
ফলে রুটটি সংক্ষিপ্ত করে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ থেকে ভারতের মুর্শিদাবাদের ময়া নৌবন্দর পর্যন্ত আড়াআড়িভাবে ২০ কিলোমিটার পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে পণ্য আনা-নেয়া হবে। সুলতানগঞ্জ নৌবন্দর চালু হলে এ পথে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার ময়া নৌবন্দরের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শুরু হবে।