অক্সফ্যামের দ্বিতীয় জাতীয় আন্তবিশ্ববিদ্যালয় নবায়নযোগ্য শক্তি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স)।
প্রতিযোগিতায় বিজিত দল ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়।
ঢাকার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী প্রতিযোগিতার সমাপনী দিন রোববার সন্ধ্যায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
এর আগে ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানি, শিল্পায়নের আগামী’ স্লোগানকে সামনে রেখে তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস, নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্য অর্জনে শ্রমিকের মানবাধিকার ও সমতা নিশ্চিত এবং জাতীয়ভাবে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক শক্তিতে বিনিয়োগ হ্রাসের দাবি নিয়ে ঢাকার প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটিতে শুরু হয় দুই দিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতা। এতে সারা দেশের ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নেয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন, অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশের অপারেশন ডিরেক্টর শান্তনু দাম, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির অ্যাডভাইজার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ আনিসুর রহমান ও ডিবেট ফর হিউম্যানিটির চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট শফিকুর রহমান।
সমাপনী বক্তব্যে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘মাটির নিচে জীবাশ্ম জ্বালানি উত্তোলন এবং এগুলোকে প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং এর ব্যবহারে আরও বেশি কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে। এতে করে পাহাড়ে আর বরফ জমবে না গরমকালে; আরও গরম বাড়বে। এভাবেই আমরা তরুণদের জন্য পৃথিবীতে রেখে যাচ্ছি সাইক্লোন-বন্যা আর ঘূর্ণিঝড়।
‘বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে বলা হয়, খনিজ তেল খানিকটা যা আছে, তাও আর বেশি দিন থাকবে না। যদিও আমাদের যুক্তি আমরা গ্লোবাল এমিশনে (নিঃসরণ) আমাদের এমিশনই খুবই কম। উন্নত দেশগুলো এর জন্য দায়ী, কিন্তু আমরা কিন্তু দায় এড়াতে পারি না। আমাদের দেশে যে জীবাশ্ম জ্বালানি আছে, তা তুলতে গিয়ে পুনর্বাসন করা লাগবে, কিন্তু সেই পুনর্বাসনের জায়গা বাংলাদেশে নাই।’
অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ‘একসময়ে ধারণা ছিল নবায়নযোগ্য শক্তিতে অনেক খরচ, কিন্তু আসলে তা নয়। ক্ষেত্রবিশেষে এটি ব্যাটারির চেয়েও সস্তা। ভারতে সোলার প্যানেলের দাম আমাদের চেয়ে কম।
‘আমরা কার্বন নিঃসরণ নিয়ে নেট জিরো এমিশনের (গ্রিন হাউস গ্যাসের উৎপাদন ও পরিবেশ থেকে তা সরানোর সামঞ্জস্য রক্ষা) কথা বলি। আমি মনে করি এটা সম্ভব। বাংলাদেশেও এটা সম্ভব।’
প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ছিল আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রাম, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, সরকারি তিতুমীর কলেজ ঢাকা, শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইইউবি), তেজগাঁও কলেজ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়।
অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতা ও পরিকল্পনায় ছিল অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ। এ আয়োজনে কারিগরি সহায়তা দেয় ডিবেট ফর হিউম্যানিটি ও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়।