বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চলাচলের রাস্তায় দেয়াল, বিপাকে গ্রামের চার শতাধিক বাসিন্দা

  •    
  • ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১৩:১৩

শেরপুর সদর থানার ওসি এমদাদুল হক বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা অভিযোগে পেয়েছি। আমরা উভয় পক্ষকেই ডেকেছিলাম। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য।’

শেরপুরে চলাচলের একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে দেয়াল তোলায় এক গ্রামের চার শতাধিক মানুষ বিপাকে পড়েছেন।

গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের দিকপাড়ায় স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহজাহান আলীর লোকজন এ দেয়াল তুলেছেন। এ কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে বিপাকে পড়েছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় সাত বছর আগে শেরপুর সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের দিকপাড়া এলাকার স্থানীয়দের দেয়া জমিতে রাস্তা করা হয়। এতে করে এ রাস্তা দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত এলাকার চার শতাধিক মানুষ চলাচল করে আসছেন। আর মাঠের উৎপাদিত বিভিন্ন ফসল এ রাস্তা দিয়েই আনা-নেয়া করা হত। এ রাস্তা দিয়েই বিভিন্ন বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে আসছিলেন।

কিন্তু হঠাৎ করে প্র‍ায় ১ মাস আগে ১৬ ডিসেম্বর এ রাস্তার শুরুতেই দিকপাড়ার বাসিন্দা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহজাহান আলী তার আত্মীয়দের নিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেন। এতে বাধা দিলে টাকা দিয়ে এলাকার সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে রাস্তার ওপর ইটের দেয়াল নির্মাণ করেন শাহজাহান আলী। এরপর থেকেই ওই এলাকার মানুষ বন্দি জীবনযাপন করে আসছেন। প্রায় ৭ বছর আগে স্থানীয়দের দানকৃত জমি দিয়ে এলাকার সবার সহযোগিতায় তৈরি করা প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এলাকার অন্তত একশ পরিবার অসহায় অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন।

শেরপুর সদর উপজেলায় চলাচলের রাস্তায় দেয়াল নির্মাণ করায় বিপাকে গ্রামের চার শতাধিক বাসিন্দা। ছবি: নিউজবাংলা

চরপক্ষীমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য হালিমা বেগম বলেন, ‘আমরা এলাকার মানুষের দানের জমিতে প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করেছি। বিএস শাহজাহান মাস্তান ভাড়া করে এনে রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়ে দেয়াল তুলেছে। এতে করে দীর্ঘ দুই মাস যাবত গ্রামের লোকজন গৃহবন্দি, বাড়ি থেকে কোথাও বের হতে পারছেন না।’

স্থানীয় বাসিন্দা কৃষক হাসেম আলী বলেন, ‘আমরা জমিতে ফসল করছি বাজারে নিয়ে গিয়ে বেচমু তাও পাইতাছি না। রাস্তা বন্ধ কোন দিক দিয়া নিয়া যামু। আমরা প্রসাশনের কাছে আমাগো রাস্তা খুইলা চাই।’

গ্রামের বাসিন্দা রাসেল মিয়া বলেন, ‘থানা থেকে পুলিশ আইসা সরেজমিনে তদন্ত কইরা গেছে। এখন পর্যন্ত তারা কোনো পদক্ষেপ নিল না। এহন নিরুপায় হয়ে মানববন্ধন করতে বাধ্য হয়েছি।’

আরেক বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরাও চলাচল করবার পারতাছি না। আমাগো পোলা পানগুইলা স্কুলে যাবার পাইতাছে না। আমরা রাস্তাডা খুইলা চাই।’

শিক্ষার্থী হাসান মিয়া বলেন, ‘আমাদের আসা যাওয়ার রাস্তা বন্ধ তাই স্কুলে যেতে পারছি না। আমরা চাই রাস্তাটা খুলে দিক।’

অভিযুক্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহজাহান আলী বলেন, ‘এ রাস্তা আগে ছিল। এখন আর রাস্তা দেয়া হবে না। এটা আমার ক্রয়কৃত জমি আমি এখানে রাস্তা দেব না।’

শেরপুর সদর থানার ওসি এমদাদুল হক বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা অভিযোগে পেয়েছি। আমরা উভয় পক্ষকেই ডেকেছিলাম। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য।’

৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে চলাচলের একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে দেয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন অবরুদ্ধ ওই এলাকার লোকজন। শেরপুর সদর উপজেলার চরপক্ষিমারী ইউনিয়নের দিকপাড়ায় শেরপুর-জামালপুর মহাসড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

শেরপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়টি নিয়ে আমি দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তাদের দুপক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করছি।’

এ বিভাগের আরো খবর