সিরাজগঞ্জের প্রাইমারি স্কুলের এক সহকারী শিক্ষক টাঙ্গাইলের কালিহাতি কলেজে চাকরি নিলেও প্রাইমারি স্কুলের খাত থেকে বেতন তুলছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ইটালি স্কুল সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ ইটালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কাজে যোগ দেন আশরাফুল আলম। একই বছরে টাঙ্গাইলের কালিহাতি শাহজাহান সিরাজ কলেজে এনটিআরসি থেকে নিয়োগের জন্য মনোনীত হন। পরে ২০২৩ সালের জুনে তিনি কালিহাতি শাহজাহান সিরাজ কলেজে যোগদান করেন।
প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের অভিযোগ, এমপিও ভূক্তির বরাদ্দ আসতে দেরি হওয়ার কারণে স্কুলের চাকরি না ছেড়েই আশরাফুল আলম কলেজে যোগ দেন এবং স্কুলে কাজ না করেই গত নভেম্বর পর্যন্ত বেতন-ভাতা তুলে নেন।
শূন্যপদ তৈরি না করায় শিক্ষক শূণ্যতায় ক্লাস ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান স্কুলের শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে আশরাফুল আলম জানান, তিনি একসময় প্রাইমারি স্কুলে চাকরি করতেন, এখন করেন না। তবে তার ভাষ্যমতে, তিনি গত অক্টোবর পর্যন্ত বেতন-ভাতা প্রাইমারি স্কুল থেকে নিয়েছেন। বর্তমানে বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘গত বছরের অক্টোবরে কলেজে যোগদান করেছি। ইতোমধ্যেই কাগজপত্র রেডি করেছি। আগামী মাসে স্কুল থেকে রিজাইন নেব।’
যদিও প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের দাবি, গত জুন থেকেই তিনি স্কুলে অনুপস্থিত। তবে তার বেতন-ভাতা এখনও চালু আছে কি না তা তারা জানেন না।
এ বিষয়ে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলমগীর কবির জানান, সম্প্রতি আশরাফুল আলমের বেতন বন্ধ করা হয়েছে। আর সহকারী শিক্ষা অফিসার বলছেন, ‘গত নভেম্বর থেকে তার বেতন বন্ধ রাখা হয়েছে।’
প্রধান শিক্ষক আলমগীর কবির জানান, আশরাফুল আলম কলেজে চাকরি হওয়ার কারণে গত জুনে চলে গেছেন। এটা জেনেই তিনি তার বেতন-ভাতা বন্ধের সুপারিশ করেছেন, তবে সুপারিশ করতে সময় লেগেছে পাঁচ মাস।
এর মাঝে আশরাফুল আলম বেতন তুলেছেন কি না বা কে তুলেছেন- এমন প্রশ্নে নীরব থাকেন প্রধান শিক্ষক।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আরও জানান, জুনেই আশরাফুল আলম রিজাইন করেছেন। আর আশরাফুলের ভাষ্যমতে, তিনি আগামী মাসে রিজাইন করবেন।
কথার এমন গরমিলের কথা জিজ্ঞাসা করলে প্রধান শিক্ষক কোনো উত্তর দেননি।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল মমিন জানান, গত তিন মাস আগে তিনি এ অঞ্চলের দায়িত্ব নিয়েছেন। আশরাফুল আলমের বিষয়টি জেনে বেতন-ভাতা বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছেন। বিগত সময়ের বেতন-ভাতা উত্তোলনের বিষয়টি তিনি জানেন না বলেও জানান।
এদিকে কর্মরত শিক্ষকরা জানান, শিক্ষক সংকটের কারণে ক্লাস নিতে অসুবিধা হচ্ছে। দ্রুত শূন্যপদ দেখিয়ে ব্যবস্থা নিলে সমস্যার সমাধান হবে।