বরিশালের উজিরপুরে বাংলাদেশের ভোটার হতে এসে আটক হয়েছেন ভারতের উড়িশ্যার এক নারী। জালিয়াতির মাধ্যমে তাকে ভোটার করার চেষ্টায় ওই নারীর স্বামী ও তার ভাইকেও আটক করা হয়েছে।
উজিরপুর মডেল থানার ওসি জাফর আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন।
আটক ভারতীয় নারীর নাম সাবিত্রী বড়িয়াল। উড়িশ্যা প্রদেশের বালাঙ্গির জেলার পাট নগর থানার বনকা বিহার গ্রামের বাসিন্দা তিনি। বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ সাতলা গ্রামের এবাদুল হককে বিয়ে করে হালিমা খাতুন নামে নাম পরিবর্তন করেছেন তিনি।
গ্রেপ্তার অপর দুইজন হলেন- উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ সাতলা গ্রামের এবাদুল হক ও এনামুল হক।
বরিশাল জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুন্সী বলেন, ‘বুধবার উজিরপুর উপজেলায় নতুন ভোটার যাচাই-বাছাই ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট গ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়। বৃহস্পতিবার ওই কার্যক্রম তদারকি করতে আমি ওই উপজেলায় যাই।’
তিনি বলেন, ‘ওই নারী সাক্ষাৎকার দিতে এলে তার কথায় সন্দেহ হয়। তখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি এদেশের নাগরিক নন বলে স্বীকার করেন। পরে সঙ্গে থাকা দুজনসহ তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।’
এ নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, ওই নারী উজিরপুরের ভোটার হওয়ার জন্য পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠি উপজেলার বাসিন্দা বাদশা মিয়া ও আনোয়ারা বেগমেকে মাতা পিতা উল্লেখ করেছেন। আবেদনপত্রে তাদের জন্ম সনদ ও ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করেছেন।
তিনি জানান, বাদশা মিয়া ও আনোয়ার বেগম ভারতীয় নারীর স্বামী এবাদুল হকের বোনের শ্বশুর শাশুড়ি। ভারতীয় নারীকে ভোটার করতে উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হারুন অর রশিদ তাকে প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন।
সাংবাদিকদের ভারতীয় ওই নারী জানান, ভারতের উড়িশ্যা থেকে দুই মাস আগে বাংলাদেশে এসেছেন তিনি। সাত বছর আগে চোরাই পথে ভারতে যাওয়া এবাদুল হকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে। ছনিয়া খানম নামে তাদের পাঁচ বছর বয়সী কন্যাও রয়েছে।
এবাদুল হাওলাদার জানান, তিনি কাজের জন্য ৭ বছর আগে ভারতে যান। সেখানে ভারতীয় ওই নারীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ভারতেই তাদের বিয়ে হয়। দুই মাস আগে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে চোরাই পথে বাংলাদেশের এসেছেন তিনি।
সাতলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদার বলেন, ‘নির্বাচনি তথ্য কর্মকর্তা ও ইউপি সদস্যের স্বাক্ষরের পরে আমি প্রত্যয়নপত্রে স্বাক্ষর দিয়েছি।’
উজিরপুর মডেল থানার ওসি জাফর আহমেদ বলেন, ‘ভারতীয় ওই নারীর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের এবং জাল-জালিয়াতির জন্য স্বামী ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা হবে। পুলিশ বাদী হয়ে ওই মামলা করবে।’