গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জায়গায় কোথাও সমস্যা তৈরি হোক এটা সরকার চায় না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বুধবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ-এর কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে গণমাধ্যম পূর্ণাঙ্গ ম্বাধীনতা ভোগ করছে এবং করবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জায়গায় কোথাও কোনোভাবে সমস্যা তৈরি হোক এটা সরকার চায় না এবং হতে দেবে না। একইসঙ্গে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের অগ্রগতি-অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।’
আরাফাত বলেন, ‘সরকার বিশ্বাস করে যে যুদ্ধাপরাধী, মুক্তযুদ্ধবিরোধী অপশক্তি, জঙ্গি, উগ্রবাদীদের একটা জায়গায় রেখে গণতন্ত্র কখনোই সফল হয় না।
‘এজন্য সরকারের অবস্থান উগ্রবাদের বিপক্ষে, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের বিপক্ষে, মৌলবাদের বিপক্ষে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাইরে যারা তাদের বিপক্ষে এবং গণতন্ত্রের পক্ষে, নির্বাচনের পক্ষে। সে জায়গায় গণমাধ্যম, রাজনীতিবিদ, সরকার- সবার মধ্যে ঐকমত্য আছে।’
সরকার পরিচালনায় ভুল-ভ্রান্তি, বিচ্যুতি থাকলে সমালোচনা করার জন্য গণমাধ্যম সম্পাদকদের আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী। সরকার এটিকে স্বাগত জানাবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। পাশাপাশি সরকারের ভালো কাজগুলোর স্বীকৃতি দিয়ে সেটি গণমাধ্যমে তুলে ধরার আহ্বান জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশের পতাকা, আমাদের জাতীয় সঙ্গীত, জাতির জনক, সংবিধান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
‘একইসঙ্গে ষড়যন্ত্র যেগুলো অতীতে বাংলাদেশে হয়েছে- জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, দেশের ভেতরেও অনেকে এসব ষড়যন্ত্রে অংশগ্রহণ করে এবং তার ফলাফল হিসেবে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট আমরা দেখেছি। এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে।’
তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে আমাদের বিদেশি বন্ধুরা বলতে চান যে সংসদ একতরফা হয়ে গেছে। তারা বলেন, এখানে বিরোধী দল নেই।
‘আমরা অবশ্যই শক্তিশালী বিরোধী দল চাই, সমালোচনা চাই, সংসদের মধ্যে আলোচনা চাই। কিন্তু জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ ও মুক্তযুদ্ধবিরোধী কোনো অপশক্তি চাই ন। এ বিষয়ে আমাদের ঐক্য থাকতে হবে।’
প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘যারা নির্বাচন বর্জন করতে বলে, হুমকি দেয়, তারা কি গণতন্ত্রের পক্ষের হতে পারে? এবারের নির্বাচন, যারা নির্বাচন বর্জনকারী তাদের না বলার নির্বাচন। তাদের এ দেশের জনগণ না বলেছে।’
এডিটরস গিল্ড গণতন্ত্রের পক্ষে, নির্বাচনের পক্ষে, বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার পক্ষে সরকারে সঙ্গে থাকবে- এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী।
এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ-এর কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি ও একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু, সাধারণ সম্পাদক ও দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড সম্পাদক ইনাম আহমেদ, আজকের পত্রিকা সম্পাদক গোলাম রহমান, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, দৈনিক সংবাদ সম্পাদক আলতামাশ কবির, জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ডিবিসি টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম, আমাদের অর্থনীতির প্রধান সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, বাংলাদেশ জার্নাল সম্পাদক শাহজাহান সরদার, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, গ্লোবাল টেলিভশনের সিইও সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, বাংলা ট্রিবিউন সম্পাদক জুলফিকার রাসেল, এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার সম্পাদক মোল্লাহ এম আমজাদ হোসেন, এক টাকার খবর সম্পাদক মুন্নী সাহা, আমাদের নতুন সময় সম্পাদক নাসিমা খান মন্টি এবং এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।