মিয়ানমারের উসকানি সত্ত্বেও দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশ যুদ্ধ চায় না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে সোমবার আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘যা ঘটছে তা তো আমরা জানি। এটা আমাদের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিষয়। তিনি একটা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। সেটাই আমাদের দলের প্রতিক্রিয়া। এই বিষয়টা নিয়ে আমাদের আশেপাশের দুই-তিনটা গ্রামের জনগণ বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। আমাদের জন্য এটা উদ্বেগের।
‘গোলা, মর্টারের শেল বাংলাদেশের ভূখণ্ডেও পড়ছে। আমাদের তিনজন ইতোমধ্যে আহত হয়েছে। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব ব্যাপারে নিশ্চয়ই মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।’
তিনি বলেন, ‘আগস্টের ২৫ তারিখে যখন মিয়ানমারের জনগণ সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে, আমাদের এয়ারস্পেস (আকাশসীমা) অনেক সময় লঙ্ঘিত হয়েছে। তারপরও আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা ছিল, তারা যতই প্রভোকেট করুক, আমরা কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করব না। আমরা যুদ্ধের পক্ষে নই। আমরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধানে আগ্রহী।
‘এখানে ব্যাপারটা হলো কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট (স্বার্থের সংঘাত)। এটা তাদের নিজেদের বিষয়। আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সেনাবাহিনীর যুদ্ধ। আমরা আহ্বান করব, পার্শ্ববর্তী দেশের জন্য আতঙ্কের কারণ হয়, এমন কনফ্লিক্টের সমাধান তাদের নিজেদেরই করা উচিত। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটা সমাধান হতে পারে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চীনের রাষ্ট্রদূত গতকাল আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। আমি তাকেও এ ব্যাপারে বলেছি, আপনাদের কথা তারা শুনে বলেই সারা বিশ্ব জানে। কাজেই আপনারা তাদেরকে যুদ্ধ থেকে, ইন্টারনাল কনফ্লিক্ট থেকে দূরে থাকার জন্য এবং তাদের বিরোধ বাংলাদেশে কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি না করুক, এই বিষয়টা আপনাদের একটু দেখা উচিত।’
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তের মিয়ানমার অংশে গত কয়েক দিন ধরে সামরিক জান্তার বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র সংগঠনগুলোর তুমুল লড়াই চলছে। সংঘর্ষের রেশ পাওয়া যাচ্ছে সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের গ্রামগুলোতে।
সংঘর্ষের মধ্যে সোমবার দুপুরে ঘুমধুম সীমান্তের জলপাইতলীতে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন।
এদিতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির প্রায় ১০০ জন সদস্য বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটছেন সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোর লোকজন।