নেত্রকোনার দুর্গাপুরে আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে শামীম মিয়া ওরফে ‘শ্যুটার শামীম’ গ্রুপের হামলায় মজিবর রহমান ওরফে ‘দা মজিবর’ নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
৫১ বছর বয়সী মজিবর দুর্গাপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য এবং নলজোরা গ্রামের বাসিন্দা।
রোববার সকাল ১১টার দিকে বিরিশিরি ইউনিয়নের শিবগঞ্জ ফেরিঘাটে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলায় আরও ছয়জন আহত হয়েছেন। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ আতাউর রহমান রিপন ও মোকশেদুর রহমান মিলন নামে দুই যুবককে আটক করেছে।
নেত্রকোনা পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, দুর্গাপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকার চোরাচালান, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগ কর্মী মজিবর রহমান ও কুল্লাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবদুল আওয়ালের মধ্যে বিরোধ চলছিল। রোববার সকালে মজিবর রহমানের ভাতিজা খায়রুল ইসলাম সুসং সরকারী কলেজে গেলে আবদুল আওয়ালের ছেলে মোহাম্মদ আবির তাকে মারধর করেন। পরে খায়রুলও শিবগঞ্জ ফেরিঘাটে অবস্থান নিয়ে আবিরকে মারধর করে প্রতিশোধ নেন।
দুই কলেজছাত্রের মারামারির বিষয়টি জানাজানির পর বেলা ১১টার দিকে আবদুল আওয়ালের ছোটভাই শামীম মিয়া ওরফে শ্যুটার শামীম দলবল নিয়ে এসে মজিবর রহমান ও তাদের লোকজনের ওপর হামলা চালান। এ সময় তারা মজিবরের একটি টিনের দোকান ভাঙচুর করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন।
প্রতিপক্ষের হামলায় মজিবর, তার ছেলে কুল্লাগড়া ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক রাজন, ছাব্বির, ফারুক মিয়া ও নাঈম মিয়াসহ ছয়জন আহত হন।
গুরুতর আহত মজিবরকে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রকিবুল হাসান বলেন, ‘হাসপাতালে আনার আগেই রক্তক্ষরণে মজিবর মারা গেছেন। তার শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। গুলি আছে কি না- সে বিষয়ে ময়নাতদন্তে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
এ বিষয়ে মজিবরের ছেলে ছাব্বির বলেন, ‘শ্যুটার শামীম দলবল নিয়ে এসে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ সময় তারা কয়েক রাউন্ড গুলিও করে।’
পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘নিহত মজিবরের বিরুদ্ধে ১০-১২টি মামলা রয়েছে। অন্যদিকে অভিযুক্ত শ্যুটার শামীমের বিরুদ্ধে মামলা আছে অন্তত ২৫টি।
‘এ ছাড়া তার (শামীম) বড় ভাই আবদুল আওয়ালের বিরুদ্ধে ২৪টি এবং অপর ভাই বদিউজ্জামানের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা চালু আছে।’
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিপন ও মিলন নামের দুজনকে আটক করেছি। বাকিদেরও আটক করা হবে। নিহতের মরদেহ মর্গে পাঠানো হচ্ছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।’