গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এক খাবারের হোটেলের মালিকের ছেলে ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশের এক পরিদর্শককে মারধর করে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ওই হোটেলের ৬ কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার সফিপুর বাজার এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
আহত পুলিশ সদস্যের নাম মো. মেহেদী হাসান। ৪২ বছর বয়সী মেহেদী গাজীপুর জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত।
এলাকাবাসীর বরাতে পুলিশ জানায়, কালিয়াকৈরের সফিপুর বাজার এলাকায় একটি ভাড়াবাড়িতে সপরিবারে বসবাস করেন ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মেহেদী হাসান। শুক্রবার তার বাড়িতে কেউ না থাকায় দায়িত্ব পালন শেষে রাত ১০টার দিকে তিনি ‘ইমা হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট’ নামের একটি হোটেলে খেতে যান। ওই সময় তিনি সিভিল পোশাকে থাকায় হোটেল মালিকের ছেলে বা কর্মচারীরা তার পরিচয় জানতেন না।
রাতের খাবারের জন্য তাকে রুটি, ডাল ও হালিম পরিবেশন করা হয়। ডাল ও হালিম থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ায় সেই খাবার তিনি ফেরত দেন। খাবার ফেরত দিলেও ক্যাশ কাউন্টারে থাকা হোটেল মালিকের ছেলে অলিউল্লাহ ওরফে শান্ত তার কাছে বিল দাবি করেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়।
এক পর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়লে অলিউল্লাহ কাঁচের গ্লাসের কিছু অংশ ভেঙ্গে মেহেদী হাসানের মুখে আঘাত করেন। হোটেলের অন্য কর্মচারীরাও সে সময় তার ওপর হামলা করেন। পরে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সফিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় আহত ওই পুলিশ কর্মকর্তা বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা করেন। এরপর ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে হোটেল মালিকের মেয়ের জামাই সাইফুল্লাহ সুমন, মমিনুল ইসলাম, শাফায়েত হোসেন, আব্দুল রাজ্জাক, জাহিদ হোসেন ও রাকিবকে গ্রেপ্তার করে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ। তবে ঘটনার মূল হোতা অলিউল্লাহ পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
আহত ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মেহেদী হাসান বলেন, ‘ক্যাশ কাউন্টারে থাকা ছেলেটিকে আমি জিজ্ঞেস করি- নষ্ট থাকায় হালিম ও ডাল খাইনি, তারপরও কেন বিল ধরেছেন? সঙ্গে সঙ্গে সে উত্তেজিত হয়ে উঠে। একপর্যায়ে গ্লাস ভেঙ্গে আমার মুখে আঘাত করে।’
কালিয়াকৈর থানার ওসি এএফএম নাসিম জানান, আহত পুলিশ কর্মকর্তা মামলা করার পর ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার মূল হোতাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।