আসামিদের প্রভাবে দৈনিক সমকালের সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া কৌশলগতভাবে বিলম্বিত না করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে ফের জোর দাবি জানিয়েছেন স্ত্রী-সন্তানসহ তার সহকর্মীরা। সাংবাদিক শিমুল হত্যার সপ্তম বার্ষিকী উপলক্ষে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে আয়োজিত স্মরণ সভায় এ দাবি জানান তার স্বজনরা।
শনিবার দুপুরে শাহজাদপুর প্রেসক্লাব হল রুমে স্মরণ সভার আয়োজন করেন স্থানীয় সাংবাদিক নেতারা।
শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি বিমল কুমার কুন্ডুর সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সংসদ সদস্য চয়ন ইসলামসহ অন্যান্যরা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ লাভলু, সাংবাদিক আব্দুল হাকিম, শিমুলপত্নী বেগম নুরুন্নাহার খাতুন, মামা হাজী আব্দুল মজিদ, ছেলে আল নোমান নাজ্জাশি সাদিক ও মেয়ে তামান্না-ই-ফাতেমা।
অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক ছিলেন শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহম্মেদ।
সমকাল জেলা প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম খান রানা, নিউ এজের সাংবাদিক সুলতানা ইয়াসমিন মিলি ও আতাউর রহমান পিন্টুসহ অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সাংবাদিক শফিউল হাসান চৌধুরী, আবুল কাশেম, মুমিদুজ্জামান জাহান, সাগর বসাক, আবু জাফর লিটন, শামসুর রহমান শিশির, জহুরুল ইসলাম, আরিফুর রহমান, জাহিদ হাসান, আমিনুল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম, ফারুক হাসান কাহার, মনিরুল গনি শুভ্র, ওমর ফারুক, মিলন মাহফুজ, রাসেল সরকার, মির্জা হুমায়ন, কোরবান আলী লাভলু প্রমুখ।
সভায় এমপি চয়ন ইসলাম বলেন, ‘সাত বছর আগে প্রকাশ্য দিবালোকে একজন সাংবাদিককে খুন করা হলো, অথচ তার বিচার এখনও হয়নি। শিমুল আমাদের ছেলে, তার বিচার এ সরকারের আমলে হতেই হবে।
‘নিহতের পরিবারের সদস্যদের প্রতি অনুরোধ করবো, মামলার নথিপত্র আমার কাছে হস্তান্তর করতে। এখন থেকে মামলা নিয়ে তাদের আর দায়িত্ব নেই।’
বিচার পরিচালনায় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘শিমুলের স্ত্রী-সন্তান ও স্বজনরা তাদের জীবদ্দশায় যাতে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দেখে যেতে পারেন, সে চেষ্টা আমি করব।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে এ সংসদ সদস্য বলেন, ‘শিমুল হত্যার বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে শাহজাদপুরের সকল গণমাধ্যমকর্মীদের একজোট হতে হবে। আপনারা একজোট না হলে খুনিরা সহজেই পার পেয়ে যাবে। বার বার সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালাবে তারা। আপনারা একজোট হলে কোনো শক্তিই শিমুলের বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার সাহস পাবে না।’
এর আগে, প্রেসক্লাব চত্ত্বরে শিমুলের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন এমপি চয়ন এবং সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী-সন্তানসহ সহকর্মীরা। সমকাল পরিবারের পক্ষ্য থেকেও ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করা হয়। এরপর বিচারের দাবিতে গণমাধ্যমকর্মীরা পৌর শহরে শোক র্যালি করেন।
শুক্রবার বাদ জুমা শিমুলের গ্রামের বাড়ি পোতাজিয়া ইউনিয়ের মাদলা গ্রামে দোয়া মহাফিলের আয়োজন করেন তার স্বজনরা।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২ ফেব্রয়ারি শাহজাদপুর সরকারি কলেজ শাখার ছাত্রলীগ সভাপতি বিজয় মাহমুদকে মারধর করে হাত-পা ভেঙে দেয়ার ঘটনায় মিরুর সমর্থকদের সঙ্গে দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ওই সময় পুলিশের সামনে মিরুর শট গানের গুলিতে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল গুলিবিদ্ধ হন। তাকে প্রথমে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরবর্তীতে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন সকালে ঢাকা নেবার পথে মারা যান তিনি।