বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বইমেলায় ‘গাঁজাসহ’ ঢুকছেন কেউ কেউ, টয়লেটে ভোগান্তি

  •    
  • ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ২২:৪১

গতি প্রকাশনীর নারী বিক্রয়কর্মী তোহা বলেন, ‘দীর্ঘক্ষণ স্টলে থাকাকালে আমাদের ওয়াশরুম ব্যবহারের প্রয়োজন পড়তে পারে। সেই ওয়াশরুমের জন্য অনেক দূরে এবং পেছনে গিয়ে একটা ওয়াশরুম করা হয়েছে, যেটাতে কোনো পানি নেই। বিশ মিনিট বসে থাকার পর বদনার অর্ধেক ভর্তি হয়। মহিলাদের ওয়াশরুমে চারটা টয়লেট আছে। এর মধ্যে আবার দুইটাতে পানির কোনো ব্যবস্থাই নেই।’

দ্বিতীয় দিনে এসে বইমেলায় দর্শনার্থীদের ভিড় কিছুটা বেড়েছে। শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় অনেকেই এসেছেন মেলায়। তবে মেলার নিয়মশৃঙ্খলা রক্ষায় ঢিলে ভাব লক্ষ্য করা গেছে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। মেলা প্রাঙ্গণেই কয়েকজনকে গাঁজা সেবন করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া টয়লেটের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং পানির সংকটে বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভুগতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, মেলার বাংলা একাডেমি অংশ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশের প্রবেশপথে তল্লাশি যন্ত্র বসানো হলেও অন্যান্য বারের মতো দর্শনার্থীদের শরীর তল্লাশি করা হচ্ছে না এবার। পাশেই নির্বিকারভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের। ফলে অনেকেই পকেটে বিড়ি-সিগারেট নিয়ে অনায়াসে ঢুকে পড়ছেন মেলায়। এসব দর্শনার্থীরা কিছুদূর গিয়ে সিগারেট ফুঁকছেন আর ধোঁয়া ছাড়ছেন।

সোহারাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে তালতলায় অবস্থিত লিটলম্যাগের সামনে যেতেই দেখা যায়, তিন যুবক সিগারেট ফুঁকছেন। তাদের সিগারেট থেকে বের হওয়া ধোঁয়ার গন্ধে আশপাশে থাকা কারও বোঝার বাকি ছিলো না যে, এটা গাঁজার গন্ধ। এ সময় অনেককে তীব্র ক্ষোভ নিয়ে ওই স্থান ছাড়তে দেখা যায়।

এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক উপ-সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘অমর একুশে বইমেলা আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অথচ এখানে এসে দেখলাম, কিছু মানুষ মাদক সেবন করছে। মাদক নিয়ে যদি এখানে প্রবেশ করতে পারে, তাহলে যে কেউ ক্ষতিকর বস্তু নিয়ে সহজে প্রবেশ করে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে পারে, যেটি আমাদের কাম্য নয়।’

মেলার মধ্যে সিগারেট ফুঁকছেন দর্শনার্থীদের কেউ কেউ। কোলাজ: নিউজবাংলা

প্রবেশপথে শরীর তল্লাশি কেন করা হচ্ছে না- জানতে চাইলে বইমেলার টিএসসি প্রবেশপথের দায়িত্বে থাকা নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আল আমিন বলেন, ‘তল্লাশি করা হচ্ছে তো!’

পাশেই তাকে তল্লাশি না করার দৃশ্য দেখানো হলে তিনি তার চেকিংয়ের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের প্রত্যেক দর্শনার্থীকে চেক করার নির্দেশ দেন। এরপর তাদের চেকিং শুরু করতে দেখা যায়।

টয়লেট নিয়ে ভোগান্তি

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে আয়োজিত মেলায় দর্শনার্থীদের জন্য তৈরি করা টয়লেট নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই স্টলের বিক্রয়কর্মী থেকে শুরু করে দর্শনার্থীদের।

সরেজমিনে গিয়ে তাদের অভিযোগের সত্যতা মেলে। টয়লেটের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং পানির সংকট বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

গত বছর মুক্তমঞ্চের নিচে থাকা টয়লেট আগতদের স্বস্তি দিলেও এবার বন্ধ করে রাখা হয়েছে ওই অংশটি। এতে অনেক দর্শনার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

গতি প্রকাশনীর নারী বিক্রয়কর্মী তোহা বলেন, ‘দীর্ঘক্ষণ স্টলে থাকাকালে আমাদের ওয়াশরুম ব্যবহারের প্রয়োজন পড়তে পারে। সেই ওয়াশরুমের জন্য অনেক দূরে এবং পেছনে গিয়ে একটা ওয়াশরুম করা হয়েছে, যেটাতে কোনো পানি নেই। বিশ মিনিট বসে থাকার পর বদনার অর্ধেক ভর্তি হয়। মহিলাদের ওয়াশরুমে চারটা টয়লেট আছে। এর মধ্যে আবার দুইটাতে পানির কোনো ব্যবস্থাই নেই।

‘আগে মুক্তমঞ্চের নিচে ওয়াশরুমের ব্যবস্থা ছিল, এবার সেটাও নেই। ওয়াশরুম নিয়ে আমাদের খুব সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ওয়াশরুমে পানি তো নেই-ই আবার এগুলোর পরিবেশও অনেক খারাপ। ওয়াশরুম স্বল্পতার কারণে আমাকে ২০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে।’

লালবাগ থেকে আসা দর্শনার্থী ঈশিতা বলেন, ‘মহিলাদের ওয়াশরুম চারটার মধ্যে দুইটা নষ্ট। তার মধ্যে যে দুইটা ঠিক আছে, সেখানে তেমন পানি নেই; ফোঁটা ফোঁটা করে পানি পড়ে। আর এগুলো নোংরা করে রাখা হয়েছে; পরিষ্কার করার মানুষও নেই।’

মিরপুর থেকে মেলায় আসা তপু বলেন, ‘ওয়াশরুম এবার সবাইকে সমস্যায় ফেলেছে। গতবার টয়লেটের পাশাপাশি আলাদা প্রস্রাবখানা ছিল। এবার সেটা নেই। তাই যারা প্রস্রাব করবে, তাদেরও টয়লেটের পেছনে লাইন দিতে হচ্ছে। এতে লাইনটা শুধু লম্বা হচ্ছে।

‘আরেকটি সমস্যা হলো, টয়লেটে ফ্ল্যাশ নেই। তাই টয়লেটগুলো আস্তে আস্তে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে।’

আজিমপুর থেকে আগত টিটু বলেন, ওয়াশরুমের বিশাল সমস্যা। পানি তো নেই-ই, আর এখানের পরিবেশও ভালো না। গতবার মুক্তমঞ্চের নিচে যে ওয়াশরুম ছিল, সেটি কেন বন্ধ করা হয়েছে জানি না। সেটি থাকলে ভালো হতো।

‘মেলায় আমরা সবাই সৃজনশীল মানুষ আসি। গতবার টাইলস করা ওয়াশরুম পেয়েছিলাম আমরা। এবার সেটাও করা হয়নি।’

এ বিভাগের আরো খবর