গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে আজ শুক্রবার বাদ ফজর শুরু হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। ইতোমধ্যে ইজতেমা ময়দানে জড়ো হয়েছেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা কয়েক লাখ মুসল্লি।
কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে পুরো ইজতেমা ময়দান। ময়দানে জায়গা না পেয়ে অনেকে আশপাশের সড়ক, ফুটপাত ও শৌচাগার ভবনের ছাদে অবস্থান নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ইজতেমা ময়দান ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে। মুসল্লিরা বলছেন, কষ্ট মেনেই আল্লাহকে রাজি-খুশি করানোর জন্য তারা ইজতেমায় এসেছেন।
ইজতেমা উপলক্ষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা।
তাবলিগ জামাতের দুপক্ষের মধ্যে বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাবলিগের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিরোধী পক্ষ মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমার প্রথম পর্বে অংশ নিচ্ছেন।
তিন দিনব্যাপী এই পর্ব আজ শুরু হয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি রোববার আখেরি মুনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
চার দিন বিরতির পর সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা করবেন ৯, ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি। প্রথম পর্বে অংশ নিতে ইজতেমা ময়দানে জমায়েত হচ্ছেন মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা।
আয়োজকরা বলছেন, বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দিন দেশের বৃহত্তম জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে এখানে। দুপুর দেড়টার দিকে কাকরাইলের মুরব্বি মাওলানা জোবায়ের এ জুমায় ইমামতি করবেন।
বৃহত্তম জুমার এই জামাতে অংশ নিতে প্রতি বছরই তাবলিগের মুসল্লি ছাড়াও গাজীপুর ও আশপাশের জেলা থেকে আগের রাতেই ইজতেমা ময়দানে অবস্থান নেন অনেক মুসল্লি। ব্যতিক্রম হয়নি এবারও।
বৃষ্টিতে মুসল্লিদের দুর্ভোগ
এদিকে শীতের মধ্যে হঠাৎ বৃষ্টিতে দুর্ভোগে পড়েছেন ইজতেমা ময়দানে অবস্থান নেয়া মুসল্লিরা। শামিয়ানা চুঁইয়ে পানি পড়ে অনেকের বিছানাপত্র ভিজে গেছে। এ অবস্থায় মুসল্লিদের অনেকে আশপাশের দোকান থেকে পলিথিন বা ত্রিপল কেনার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মূল মঞ্চে মুরব্বিদের বয়ান বন্ধ হয়ে যায়। সবাইকে ধৈর্য ধরে খিত্তায় অবস্থান করার আহ্বান জানান আয়োজকরা।
বৃহস্পতিবার দিনভর আকাশ মেঘলা থাকলেও মাগরিবের নামাজের পর বৃষ্টি শুরু হয়। চটের শামিয়ানার নিচে বৃষ্টি প্রতিরোধের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ভিজে গেছে মুসল্লিদের বিছানা ও মালপত্র। ময়দানের নিচু স্থানে জমেছে পানি।
ইজতেমায় আসা মুসল্লি ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘নামাজের পর বয়ান শুরু হওয়ার পর হঠাৎই বৃষ্টি নামে। চটের সামিয়ানার নিচে বৃষ্টি প্রতিরোধের কোনো কিছু না থাকায় অনেক মুসল্লির বিছানা, মালপত্র ভিজে গেছে।’
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থেকে আসা মুসল্লি তসলিম হোসেন বলেন, ‘আমরা ৮০ জন সাথী ইজতেমা ময়দানে এসেছি। গতকাল (বুধবার) রাতে এবং আজ সন্ধ্যার বৃষ্টিতে সবাই দুর্ভোগে রয়েছেন। তবে আল্লাহ আমাদের ইমানি পরীক্ষা নিচ্ছেন। কষ্ট হলেও ইজতেমা শেষ করেই আমরা বাড়ি ফিরব ইনশাআল্লাহ।’
আরেক মুসল্লি জামিল হোসেন বলেন, ‘শীতের মধ্যে এই বৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য ত্রিপল কিনেছি। তবে এই সুযোগে বিক্রেতাদের অনেকেই বাড়তি দাম আদায় করছেন।’