বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ড. ইউনূসসহ চারজনের আপিল গ্রহণ, জামিন বহাল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ১৩:২৮

আদালতের সর্বশেষ রায়ের বিষয়ে আইনজীবী বলেন, ‘আজকের আদালত আমাদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন এবং নিম্নতম আদালতের সম্পূর্ণ রায়কে সাসপেন্ড করেছে; স্থগিত করেছে এবং আগামী তিন তারিখ, মার্চের ৩ তারিখ ওই নিম্ন কোর্টের নথি আসার জন্য ডেট ফিক্সড করেছেন। আর সবাইকে আপিল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত, শেষ না হওয়া পর্যন্ত উনাদেরকে স্থায়ী জামিন দিয়েছেন। আজকের এই হলো আদেশ।’

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের নামে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল শুনানির জন্য রোববার গ্রহণ করেছে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল।

ওই চারজনের জামিনও বহাল রেখেছে আদালত।

শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এম এ আউয়াল এসব আদেশ।

পরে আদেশের বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ড. ইউনূসসহ চারজনের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন।

তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা আদালতে জামিন প্রার্থনা করেছি এবং আমরা আপিল করেছি। তার আগে আপনাদের কাছে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাহেব যে কথাটা বলছেন, সেটা আমি আবার বলতে চাই। রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মহল থেকে আরম্ভ করে সর্ব জায়গায় বিদেশিদের কাছেও বলা হচ্ছে, সরকার মামলা করে নাই, এটা। এটা করেছে শ্রমিক, কিন্তু ঘটনাটা সঠিক না।

‘আপনারা জানেন এই মামলা করেছে সরকার তার প্রতিষ্ঠান কলকারখানা অধিদপ্তরের মাধ্যমে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে যে, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ীকরণ করা হয় নাই, অর্জিত ছুটি দেয়া হয় নাই এবং লভ্যাংশের পাঁচ পারসেন্ট দেয়া হয় নাই।

‘এই মিথ্যা মামলা সরকারি প্রতিষ্ঠান সরকারি নির্দেশ করেছে এবং এই মামলারই রায় হয়েছে। রায়টা যেটা হয়েছে, রায়টা সম্পূর্ণ অবৈধ।’

আদালতের সর্বশেষ রায়ের বিষয়ে আইনজীবী বলেন, ‘আজকের আদালত আমাদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন এবং নিম্নতম আদালতের সম্পূর্ণ রায়কে সাসপেন্ড করেছে; স্থগিত করেছে এবং আগামী তিন তারিখ, মার্চের ৩ তারিখ ওই নিম্ন কোর্টের নথি আসার জন্য ডেট ফিক্সড করেছেন। আর সবাইকে আপিল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত, শেষ না হওয়া পর্যন্ত উনাদেরকে স্থায়ী জামিন দিয়েছেন। আজকের এই হলো আদেশ।’

প্রেক্ষাপট

শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় গত ১ জানুয়ারি শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের তিন শীর্ষ কর্মকর্তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয় বিচারিক আদালত। একই দিনে চারজনকে শর্তসাপেক্ষ জামিনের আদেশ দেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা।

এ বিষয়ে সে সময় ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছিলেন, আপিলের শর্তে আদালত সবাইকে এক মাসের জামিন দিয়েছেন।

রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, তারা ন্যায়বিচার পাননি। হাইকোর্টে আপিল করবেন।

এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের সিইও আশরাফুল হাসান, ট্রাস্টি নূরজাহান বেগম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম শাহজাহান।

ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের নামে মামলাটি করেন।

মামলায় শ্রমিকদের অভিযোগে বলা হয়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ড. ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে তারা শ্রম আইনের লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে পারেন। এর মধ্যে ১০১ শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা থাকলেও তাদের স্থায়ী করা হয়নি। শ্রমিকদের অংশগ্রহণের তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশের পাঁচ শতাংশ শ্রমিকদের দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হয়নি।

২০২৩ সালের ২২ আগস্ট এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গত বছরের ৮ নভেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দেন আসামিরা।

এর আগে গত বছরের ৮ মে মামলা বাতিলের আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে ড. ইউনূসের লিভ টু আপিল খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ। এরপর ৬ জুন আদালত তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেয়।

এ মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজন বিবাদীর আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্যে জমা দেয়া হয় আদালতে। সেখানে বলা হয়, গ্রামীণ টেলিকম যেসব ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে সেগুলো চুক্তিভিত্তিক। নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে তা নবায়নের মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়। গ্রামীণ টেলিকমের প্রকল্প নোকিয়া কেয়ার ও পল্লীফোনের কার্যক্রম তিন বছরের চুক্তি অনুযায়ী পরিচালিত হয়। মেয়াদ শেষে তা নবায়ন হয়। যেহেতু গ্রামীণ টেলিকমের কার্যক্রম চুক্তির ভিত্তিতে পরিচালিত, তাই সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, আইনের ২৮ ধারা অনুযায়ী, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এর লভ্যাংশ বিতরণযোগ্য নয়। ফলে, মূল লভ্যাংশের পাঁচ শতাংশ অংশগ্রহণ তহবিল ও কল্যাণ তহবিলে দেয়ার সুযোগ নেই, কিন্তু গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারী ইউনিয়ন ওই অর্থ পাওয়ার আশায় শ্রম আদালতে মামলা করে।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরকে জানানো হয়, বিষয়টি নিয়ে মামলা চলমান। আদালত যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিভাগের আরো খবর