শেরপুরে এক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জেল থেকে বের হয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ভাগ্নের গলা কেটে হত্যা করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নালিতাবাড়ীর যোগানিয়া ইউনিয়নের সাবেক এ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হবির নিজ বাড়িতে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো শাহ কামাল ওরফে কদি মিয়া একজন দিনমজুর ছিলেন। তিনি পার্শ্ববর্তী গড়াকুড়া এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করছিলেন। ইউপি চেয়ারম্যান হবি সম্পর্কে তার মামা হন।
এ ঘটনায় মামলার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার রাতে চেয়ারম্যানসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে নালিতাবাড়ী পুলিশ।
ছয়জন হলেন নিহতের মামা হাবিবুর রহমান হবি, স্ত্রী আমেলা খাতুন ঝর্ণা, তাদের ছেলে সারোয়ার জাহান শান্ত, হাবিবুরের দুই ভাতিজা মোস্তফা ও রাহুল মিয়া এবং হবির ভাই হারেজ আলী।
নালিতাবাড়ী সার্কেলের এএসপি দিদারুল ইসলাম শনিবার বিকেলে এক বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালে জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে হাবিবুরের গুলিতে ভাইটকামারী গ্রামের ফজল মিয়ার ছেলে ইদ্রিস আলীর হত্যার অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় হাবিবুর, তার স্ত্রী-সন্তান, ভাতিজাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়। সম্প্রতি এ মামলায় জামিনে বেরিয়ে আসে হবি। জমি নিয়ে পূর্বের দ্বন্দ্ব মিটমাট না হওয়ায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ভাগ্নেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করায় হবি।’
এএসপি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে কদুকে টাকা হাওলাত দেয়ার কথা বলে হবি চেয়ারম্যান নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান। পরে হাবিবুর, তার স্ত্রী ঝর্ণা ও হাবিবুরের ভাই হারেজের পরিকল্পনা অনুযায়ী হাবিবুরের ছেলে শান্ত ও তার দুই ভাতিজা মোস্তফা ও রাহুল তাকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা নিশ্চিত করেন।
মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় তিন ব্যক্তি জানান, হবি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত চারটি খুনের অভিযোগ আছে। তার ভয়ে কেউ কিছু বলতে পারে না। তার ছেলেও একজন বড় সন্ত্রাসী বলে জানান তারা।
নালিতাবাড়ীর যোগানিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ বলেন, ‘আমরা চাই এ জঘন্য ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। এদের শাস্তি না হলে এলাকায় শান্তি ফিরে আসবে না।’
নিহতের ভাই ওসমান বলেন, ‘আমার ভাইকে যারা এভাবে হত্যা করেছে, তাদের ফাঁসি চাই, শাস্তি চাই।’
নালিতাবাড়ী সার্কেলের এএসপি দিদারুল ইসলাম জানান, আসামিদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি, হ্যান্ড গ্লাভস ও রক্তমাখা এক জোড়া জুতা উদ্ধার করা হয়। ছয়জন আসামিকেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।