বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দেশের ইতিহাসে সলিড কোকেনের সবচেয়ে বড় চালান জব্দ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২৫ জানুয়ারি, ২০২৪ ১৯:২৮

ডিএনসি জানায়, কোকেনের এই চালানটি আফ্রিকার দেশ মালাউয়ি অথবা ইথিওপিয়া থেকে বাংলাদেশে এসেছে। চালানটি পাচার করতে বাংলাদেশকে ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। কারণ এই পরিমাণ কোকেনের চাহিদা বাংলাদেশে নেই।

দেশের ইতিহাসে সলিড কোকেনের সবচেয়ে বড় চালান জব্দ করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। জব্দ করা মাদকের মূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা। আফ্রিকার দেশে মালাউয়ির নোমথেনডাজো তাওয়েরা সোকো নামে ৩৫ বছর বয়সী এক নারী ৮ কেজি ৩০০ গ্রামের এই কোকেনের চালানটি বাংলাদেশে নিয়ে আসেন।

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কোকেনের এ চালানসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ডিএনসির উত্তর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার এসব তথ্য জানান ডিএনসির পরিচালক (অপারেশন) তানভীর মমতাজ।

ডিএনসি জানায়, কোকেনের এই চালানটি আফ্রিকার দেশ মালাউয়ি অথবা ইথিওপিয়া থেকে বাংলাদেশে এসেছে। চালানটি পাচার করতে বাংলাদেশকে ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। কারণ এই পরিমাণ কোকেনের চাহিদা বাংলাদেশে নেই।

তানভীর মমতাজ বলেন, ‘কোকেন চোরাচালানের আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেটের দেশি ও বিদেশি সক্রিয় কয়েকজন সদস্য বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করছে। এ উদ্দেশ্যে কোকেনের একটি বৃহৎ চালান আফ্রিকা থেকে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে একজন আফ্রিকান নাগরিকের মাধ্যমে ঢাকায় আসবে- এমন তথ্য পাওয়ার পর থেকেই আমরা গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করি। একপর্যায়ে বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে এপিবিএনকে সঙ্গে নিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি টিম গঠন করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৮ নম্বর টার্মিনালের বোর্ডিং ব্রিজ এলাকায় অবস্থান করতে থাকি। ফ্লাইটটি থেকে নামা সকল বিদেশি যাত্রীকে আমরা অনুসরণ করি। এর মধ্যে দেখা যায়, নোমথেনডাজো তাওয়েরা সোকো নামে এক বিদেশি নারী বিমানবন্দরের নিচ তলায় ভিসা অন অ্যারাইভাল ডেস্কে দীর্ঘক্ষণ ধরে অবস্থান করছেন। তার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে সন্দেহজনক হওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে নোমথেনডাজো স্বীকার করেন যে তার লাগেজে অবৈধ মাদকদ্রব্য কোকেন আছে। পরে লাগেজের ভেতর বিশেষভাবে রক্ষিত ৮ কেজি ৩০০ গ্রাম কোকেন জব্দ করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘নোমথেনডাজো আফ্রিকার দেশ মালাউয়ির নাগরিক। প্রথমে মালাউয়ি থেকে ইথিওপিয়া যান তিনি। পরে সেখান থেকে যান দোহা এবয় দোহা থেকে কাতার এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশে আসেন। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি তার বাংলাদেশ থেকে আবারও মালাউয়ি যাওয়ার কথা ছিল।’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

ডিএনসি পরিচালক জানান, কোকেনের এই চালানটি বাংলাদেশ থেকে অন্য কোনো দেশে চলে যেত। ধারণা করা হচ্ছে, তাওয়েরা সোকো চালানটি মালাউয়ি অথবা ইথিওপিয়া থেকে সংগ্রহ করেছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে সোকো জানান, ২০২৩ সালে তিনি বাংলাদেশে গার্মেন্টস ব্যবসার কথা বলে একবার এসেছিলেন। এবারও তিনি একটি গার্মেন্টসের আমন্ত্রণপত্র নিয়ে আসেন। অন অ্যারাইভাল ভিসা নেয়ার জন্য তিনি তার পরিচয় লুকিয়ে গার্মেন্টস ব্যবসার নাম করে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন।

ডিএনসি পরিচালক আরও বলেন, ‘সোকো পেশায় একজন নার্স। তিনি মূলত কোকেনের এই চালানের বহনকারী। বাংলাদেশ থেকে আরেক বিদেশি নাগরিকের কাছে এই চালান পৌঁছে দিয়ে তার নিজ দেশে চলে যাওয়ার কথা ছিল।’

বাংলাদেশে সোকোর কার কাছে কোকেন হস্তান্তর করার কথা ছিল- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে তদন্ত করছি। তবে বাংলাদেশে অবস্থানরত কয়েক জন বিদেশি নাগরিকের কাছে এই কোকেন যাওয়ার কথা ছিল। আমরা একজন বিদেশিকে সন্দেহ করছি। তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না। আশা করি, চক্রটিকে ধরতে পারব।’

২০২৩ সালে সোকো বাংলাদেশে কোকেনের চালান নিয়ে এসেছিলেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তখন তিনি গার্মেন্টস ব্যবসার নাম করে এসেছিলেন। সে সময় তিনি আসলে কিসের জন্য এসেছিলেন, সে বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি।’

কোকেনের এই আন্তর্জাতিক চক্রের সঙ্গে বাংলাদেশের কেউ জড়িত আছে কি না- জানতে চাইলে তানভীর মমতাজ বলেন, ‘কোকেনের চালানের সঙ্গে দেশি এবং বিদেশি চক্র জড়িত আছে। এই চক্রটিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর