মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলা অংশে বিস্তীর্ণ আড়িয়াল বিলের বিভিন্ন ভিটায় উৎপাদিত মিষ্টির কুমড়ার কাঙ্ক্ষিত দামে লাভের স্বপ দেখছেন কুমড়া চাষিরা। কিন্তু মোজাইক ভাইরাসের (শ্বেতী রোগ) আক্রমণ ও বৈরি আবহাওয়ায় কুমড়ার আশানুরূপ ফলন পাননি তারা। বিশেষ করে শ্বেতী রোগের আক্রমণে আড়িয়াল বিলে অসংখ্য ভিটায় চাষকৃত কুমড়ার ক্ষতি হয়েছে। তবে পাইকারি বাজারে কুমড়ার দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা আনন্দ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয় পাইকাররা আড়তে এসব কুমড়ার কেজি বিক্রি করছেন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। বর্তমানে খোলা বাজারে কুমড়ার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা করে। এ বছর কুমড়ার উৎপাদন কম হলেও দাম পুষিয়ে নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কুমড়া চাষিরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রীনগর উপজেলার গাদিঘাট বাজার সেতু সংলগ্ন ট্রলার ভর্তি বিশাল সাইজের কুমড়ার সমারোহ। আড়িয়াল বিলের বিভিন্ন ভিটায় উৎপাদিত এসব কুমড়া আনা হচ্ছে বিক্রির জন্য। স্থানীয় পাইকাররা ট্রলারে থাকা এসব কুমড়ার স্তুপ চুক্তিতে কিনে রাজধানীর বিভিন্ন সবজির পাইকারি বাজারে। শ্রমিকরা নৌকার কুমড়া আনলোড করে ট্রাকে লোড করেন।
কৃষক মহিউদ্দিন দেওয়ান বলেন, ‘গত ৬ থেকে ৭ বছর ধরে কুমড়ার ভিটায় শ্বেতী রোগের আক্রমণে কাঙ্ক্ষিত ফলন পাচ্ছি না। রোগটির হানায় ভিটায় কুমড়া গাছসহ অপরিপক্ক কুমড়া পঁচে গেছে। শ্বেতী রোগ দমনে কোনো প্রতিকার খুঁজে পাচ্ছেন না। গত বছর শ্বেতীর আক্রমণে ও কুমড়ার বাজারমূল্য না পাওয়ায় লোকসান হয়েছে কৃষকদের। এ বছর আমি ২০টি ভিটায় বড় সাইজের লম্বাকৃতির কুমড়ার (আঞ্চলিক নাম চৈত্রালী কুমড়া) আবাদ করেছি। এ পর্যন্ত ৭০ হাজার টাকার কুমড়া বিক্রি হয়েছে।’
কুমড়া চাষি বাবুল ব্যাপারী বলেন, ‘আজ ৮০ হাজার টাকার কুমড়া বিক্রি করছি, তবে ঘূর্ণিঝড় মিকজাউম ও শ্বেতী রোগের প্রভাবে কুমড়ার সাইজ অনেকাংশে ছোট হয়েছে।’
কৃষক দেলোয়ার হাসান বলেন, ‘আমি ৪০টি ভিটায় কুমড়ার চাষ করেছি। এরই মধ্যে দেড় লাখ টাকার কুমড়া বিক্রি করেছি। এ সিজনে সাড়ে ৩ লাখ টাকার কুমড়া বিক্রির স্বপ দেখছি।’
শ্রীনগর উপজেলা কৃষি অফিসার মোহসিনা জাহান জানান, শ্বেতী রোগ প্রতিরোধে ইপিটা ক্লারাপিড গ্রুপের কীটনাশক স্প্রে করার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আড়িয়াল বিলের ১২০ হেক্টার জমিতে কুমড়া চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কৃষকেরা মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করে ভালো দামও পাচ্ছেন।