নারায়ণগঞ্জের গ্যাস সংকটের সমাধন না হলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে নাগরিক কমিটি।
জেলার প্রেস ক্লাবের সামনে সোমবার বিকেলে আয়োজিত মানববন্ধনে এ হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট এবি সিদ্দিকের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন নাগরিক কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহিদুল হক দীপু, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা সভাপতি ধীমান সাহা, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি অ্যাডভোকেটে জিয়াউল ইসলাম কাজলসহ সংগঠনের নেতারা।
মানববন্ধনে দেয়া বক্তব্যে রফিউর রাব্বী বলেন, “দেশে গ্যাসের চাহিদা দৈনিক ৩৮০ কোটি ঘনফুট, কিন্তু এখন সরবরাহের পরিমাণ ২৫০ কোটি ঘনফুটের নিচে নেমে এসেছে। এই সংকট সমাধানে সরকারের বাস্তবধর্মী কোনো পদক্ষেপ নাই; বরঞ্চ এইসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেউ যাতে আদালতে যেতে না পারে, সরকার তার জন্য সংবিধান বিরোধী ‘দায়মুক্তি আইন’ করে রেখেছে।”
তিনি বলেন, ‘গ্যাস দেশের নিজস্ব সম্পদ হওয়া সত্ত্বেও সরকারের ভুল নীতি, অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে দেশে আজ গ্যাস সংকট তীব্রতর হয়ে উঠেছে। একদিকে নিয়ম অনুযায়ী গ্যাস অনুসন্ধান হচ্ছে না। অন্যদিকে সমুদ্র ও স্থলভাগে পাওয়া গ্যাস ক্ষেত্রগুলো থেকে যথাযথভাবে গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে না।
‘এলএনজি ব্যবসায়ীদের সুবিধায় অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বন্ধ রাখাসহ পুরো জ্বালানি খাতকে আমদানিনির্ভর করে সিন্ডিকেটের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে।’
সংগঠনের সভাপতি এবি সিদ্দিক বলেন, “গ্যাসের সংকটে এখন বাসাবাড়িতে যেমন হাহাকার, তেমনই বহু শিল্পকারখানা ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। ‘দায়মুক্তি আইন’ আইন বাতিল করে জ্বালানি খাতে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে তিতাসের দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তারা অর্থের বিনিময়ে অবৈধ সংযোগ দিয়ে গ্যাস সংকটকে প্রতিনিয়ত আরও বাড়িয়ে চলেছে। সরকারের জ্বালানি খাত পুরোপুরি দুর্নীতিবাজদের দখলে চলে গেছে। দ্রুত গ্যাস সংকটের সমাধান না হলে নারায়ণগঞ্জ থেকে ওই তিতাস গ্যাসসহ যারা যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হবে।’
সমাবেশে বক্তারা আবাসিক খাতে গ্যাস সংকট দ্রুত সমাধনের দাবি জানান। তা না হলে এ শিল্পাঞ্চল থেকে সংকট নিরসনে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দেন।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে অংশ নেন সিপিবির জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাসদের জেলা সদস্য সচিব আবু নাইম খান বিপ্লব, ন্যাপের জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, সামাজিক সংগঠন সমমনার সভাপতি সালাহউদ্দিন, সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা, সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট প্রদীপ ঘোষ বাবু, নারী নেত্রী পপী রানী সরকার, শিক্ষক উম্মে লায়লাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের কর্মীরা।