বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পরিযায়ী পাখি ছাড়াই জাবিতে পাখিমেলা, হতাশ দর্শনার্থীরা

  • প্রতিনিধি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়   
  • ১৯ জানুয়ারি, ২০২৪ ১৯:১৮

বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলোতে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জাবির পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনের লেক, পরিবহন চত্বর-সংলগ্ন লেক, জয়পাড়া লেক ও বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের সামনের লেকে পাখি নেই। ফলে লাল শাপলায় আচ্ছাদিত বাকি লেকগুলোতে তাদের কিচিরমিচির আর জলকেলি খুব একটা চোখে পড়ছে না।

পাখির গুরুত্ব সম্পর্কে গণসচেতনতা বৃদ্ধি ও পাখি সংরক্ষণের লক্ষ্যে ‘পাখ-পাখালি দেশের রত্ন, আসুন সবাই করি যত্ন’ স্লোগানকে সামনে রেখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনব্যাপী ‘পাখিমেলা-২০২৪’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলোতে পাখি না থাকলেও মেলা উপলক্ষে রাজধানী ও আশপাশের এলাকা থেকে পাখিপ্রেমীরা এসে ভিড় জমান ক্যাম্পাসে। বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি পাখি দেখতে না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে তাদের। তবে ক্যাম্পাসে পাখি থাকা না থাকার সঙ্গে পাখিমেলার সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলোতে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জাবির পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনের লেক, পরিবহন চত্বর-সংলগ্ন লেক, জয়পাড়া লেক ও বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের সামনের লেকে পাখি নেই। তবে সাধারণের প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টারের অভ্যন্তরের লেকে পরিযায়ী পাখি আছে। ফলে লাল শাপলায় আচ্ছাদিত বাকি লেকগুলোতে তাদের কিচিরমিচির আর জলকেলি খুব একটা চোখে পড়ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা জানান, এ বছর লেকগুলোতে পরিযায়ী পাখি আশঙ্কাজনক হারে কম এসেছে। কিছু পাখি আসলেও পরে তারা অন্যত্র চলে গেছে।

ঢাকার কল্যাণপুর থেকে পরিবারের সঙ্গে মেলায় ঘুরতে আসেন জাহানারা খাতুন। তিনি বলেন, ‘পরিবারের সঙ্গে আগেও কয়েকবার পাখিমেলায় এসেছিলাম। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলোতে অনেক পরিযায়ী পাখি দেখেছি। কী সুন্দর করে পাখিরা উড়ত, কিচিরমিচির ডাকতো আর জলকেলি করত। কিন্তু এবার কোনো পাখি দেখতে পাচ্ছি না, তাই কিছুটা মন খারাপ।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম বলেন, ‘পাখিমেলার অর্থ এই নয় যে সেখানে পাখি থাকতে হবে। অনেকেই বলছেন, এই ক্যাম্পাসে পাখি দিন দিন কমে যাচ্ছে। আমরা সেটিকে ধরে রাখার চেষ্টা করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের সামনের ও পেছনের উভয় লেকে আগে পাখি বসত। ওই লেক দুটি পরিষ্কার করা হয়েছে, এরপরও পাখি বসেনি।’

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনে উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম বেলুন উড়িয়ে পাখিমেলার উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘পাখিমেলা পাখিকে ভালোবাসতে উৎসাহিত করে। পাখির প্রতি ভালোবাসা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। পাখির প্রতি সকলকে দায়িত্বশীল ও যত্নবান হতে হবে। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে প্রকৃতি ও পরিবেশ ঠিক রাখতে সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পাখির বসবাস উপযোগী পরিবেশ ধরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ জন্য কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। পাখির অভয়ারণ্য নিশ্চিত করার স্বার্থে আরোপিত বিধি-নিষেধ মানতে হবে। ক্যাম্পাসের প্রকৃতি ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে অনেক অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি বন্ধ রাখা হয়েছে। ব্যাপক জনসমাগম রোধ করা সম্ভব হলে পাখির অভয়ারণ্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’

এ বছর দিনব্যাপী মেলায় পাখি দেখা প্রতিযোগিতা, পাখিবিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনী, শিশু-কিশোরদের জন্য পাখির ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, টেলিস্কোপ ও বাইনোকুলার দিয়ে শিশু-কিশোরদের পাখি পর্যবেক্ষণ, পাখির আলোকচিত্র ও পত্রপত্রিকা প্রদর্শনী, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পাখি চেনা প্রতিযোগিতা এবং সবার জন্য উন্মুক্ত পাখিবিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া মেলায় পাখি সংরক্ষণে অবদান রাখায় ‘বিগ বার্ড বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড’, ‘কনজারভেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ ও ‘সায়েন্টিফিক পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খানের সভাপতিত্বে ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এ টি এম আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, পাখিমেলার আহ্বায়ক ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান, বিশিষ্ট পাখি বিশারদ ইনাম আল হক, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসেন চৌধুরী, আইসিইউএন-এর প্রতিনিধি সারোয়ার আলম দিপু ও আরণ্যক ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি আরিফুর রহমান প্রমুখ।

এ বিভাগের আরো খবর