ধানের জেলা হিসেবে পরিচিত ও দেশের অন্যতম বৃহৎ মোকাম নওগাঁয় পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দাম বেড়েই চলছে। সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি ও খুচরা বাজারে মোটা ও চিকন চাল কেজিতে দুই থেকে তিন পর্যন্ত দাম বেড়েছে।
দেশের ধান-চালের চাহিদার বড় অংশ মেটায় উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁ। জেলায় চালের সংকট নিয়ে ধান-চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে ধানের সরবরাহ কম থাকায় চালের বাজারে প্রভাব পড়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। যা থেকে ৯ লাখ ৭ হাজার ৫২৫ টন ধান উৎপাদন হয়।
নওগাঁ শহরের পৌর খুচরা চাল বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে বর্তমানে প্রকারভেদে প্রতি কেজি দাম বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। জিরাশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এই চাল বিক্রি হয়েছে ৬০-৬২টাকায়। প্রতি কেজি কাটারীভোগ চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এই চাল বিক্রি হয়েছে ৬৫-৬৮ টাকা।
প্রতি কেজি স্বর্ণা-৫ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এই চাল বিক্রি হয়েছে ৪৬-৪৮ টাকায়। প্রতি কেজি ব্রিধান-২৯ ও ৪৯ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৪-৫৬ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এই চাল বিক্রি হয়েছে ৫২-৫৪ টাকায়।
চাল কিনতে আসা শহরের মাষ্টারপাড়া মহল্লার বাসিন্দা জুলফিকার আলী বলেন, সবকিছুর দাম দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। এর সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। ধানের জেলায় চালের দাম বেড়েছে। এমনভাবে দাম বাড়তে থাকলে আমাদের মত নিম্ন আয়ের মানুষ খাব কী।
চাল কিনতে আসা রিকশাচালক মাসুদ হোসেন বলেন, চাল কিনতে এসে দেখি সব জাতের চাল দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে কেজি প্রতি। ভাবছিলাম এক বস্তা ( ৫০ কেজি) চাল কিনবো। কিন্তু বর্তমানে এক বস্তায় ১৫০টাকা বেশি দিয়ে তাহলে কিনতে হবে। তাই মাত্র ১০ কেজি স্বর্ণা-৫ জাতের চাল কিনলাম।
সেফালী বেগম নামের গৃহিণী বলেন, হুট করে চালের দাম বেড়ে গেছে কোনো কারণ বুঝলাম না। সবকিছুর দাম বেড়েছে শুধু বাকি ছিল হয়তো চালের দাম। সেটাও বাড়ল। আমাদের মত মধ্যেবিত্তরা কীভাবে জীবন যাপন করব খেয়ে পড়ে সেটাই এখন ভাবছি।
নওগাঁ পৌর খুচরা চাউল বাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক উত্তম সরকার বলেন, প্রকারভেদে সব চালের ( ৫০ কেজি) ১০ থেকে ১৫০ টাকা করে বেড়েছে। আমরা মহাজন ও মিলারদের কাছে থেকে প্রতি বস্তায় বেশি দাম দিয়ে চাল কিনছি। যার কারণে খুচরা বাজারেও চালের দাম বেড়েছে কিছুটা।
নওগাঁ ধান্য-চাউল আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিরোদ বরণ সাহা চন্দন বলেন, বাজারে ধানের সরবরাহ কম থাকায় চালের বাজারে প্রভাব পড়েছে। শীতের কারণে বা অনেক কৃষকরা ধান বাজারে বিক্রি কমিয়ে দিয়েছেন। তাছাড়া তীব্র শীত ও কুয়াশার কারনে মিলগুলোতে ধান শুকিয়ে চাল উৎপাদন করতেও সমস্যা হচ্ছে। মূলত এসব কারণে চালের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।