‘গত তিন দিন ধরে রোদের দেখা নেই। ঠান্ডায় খুবই খারাপ অবস্থা হয়ে গেছে। কাপড় ধুইলে শুকাতে চায় না। শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড়ও বাসায় তেমন নাই। অন্যের জমিতে কাজ করে যা আয় হয় তা দিয়ে কোনোরকমে সংসার চলে। শীত যেভাবে বাড়ছে, তাতে বাড়ি থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। তাই বাসায় বসে আছি। এখন পেটে কী দিব সেটার চিন্তা করতেছি।’
শনিবার সকাল ৮টার দিকে এভাবে কথাগুলো বলছিলেন দিনাজপুর সদর উপজেলার চেহেলগাজী ইউনিয়নের চাদগঞ্জ গ্রামে ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ নরেশ রায়।
হিমালয়ের পাদদেশের জেলা হিসেবে পরিচিত দিনাজপুরে গত তিন ধরে রোদের দেখা নেই। ইতোমধ্যে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে গেছে। বর্তমানে এই জেলার ওপর দিয়ে মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শনিবার এই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
ইজিবাইকচালক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘রোদের দেখা নেই। তার উপর ঘন কুয়াশা পড়ছে। শীতে ঠান্ডায় ঠিকমতো গাড়ি চালানো যাচ্ছে না। তার উপর ঠান্ডার কারণে দুপুর পর্যন্ত রাস্তায় মানুষের ঠিকমতো দেখা যায় না। ভাড়া পাওয়া না যাওয়ায় দিনশেষে দেখা যায় ইজিবাইকের জমার টাকাও ওঠে না।’
উলিপুর গ্রামের কৃষক আকবর হোসেন বলেন, ‘ঠান্ডা ও কুয়াশার কারণে শরীর চলে না। ক্ষেতে আলু লাগাইছি৷ কুয়াশার কারণে আলুর অনেক রোগ হয়৷ কিন্তু ঠান্ডার কারণে ক্ষেতে কীটনাশক ছিটাতে পারছি না। খুবই সমস্যা হচ্ছে।’
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া সহকারী আসাদুজ্জামান জানান, ‘কয়েকদিন ধরে দিনাজপুরের তাপমাত্রা আস্তে আস্তে নামছে। বর্তমানে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এই জেলার ওপর দিয়ে। আজ দিনাজপুরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা আরও কমবে।’