বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ধর্ষণের শিকার’ স্কুলছাত্রীর মৃত্যু

  • প্রতিনিধি, নীলফামারী   
  • ১২ জানুয়ারি, ২০২৪ ১৮:৫৬

জলঢাকা থানার ওসি মুক্তারুল আলম বলেন, ‘ডিমলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত্যু হলে ডিমলা থানায় মামলা হতে পারতো। তবে এ বিষয়ে জলঢাকা থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। যদি অভিযোগ পাই তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

নীলফামারীর জলঢাকায় এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার পর তার মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে।

স্থানীয়রা এই অভিযোগ করলেও পরিবারের সদস্যরা বলছেন, বিস্তারিত তারা জানেন না। আর পুলিশের দাবি, এ নিয়ে এখনও কেউ অভিযোগ দেননি।

উপজেলার একটি ইউনিয়নের ওই স্কুলছাত্রী পড়তো স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণিতে। চাকরি সূত্রে মেয়েটির বাবা-মা উভয়েই ঢাকায় থাকেন। মেয়েটি দাদার পরিবারে থাকতো।

স্থানীয়রা জানান, গত ৬ জানুয়ারি রাতে বাড়ি থেকে ওই স্কুলছাত্রী নিখোঁজ হয়। পরে পাশের একটি এলাকায় অজ্ঞান অবস্থায় অর্ধ-উলঙ্গভাবে তাকে পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী।

মেয়েটিকে প্রথম দেখতে পাওয়া ৭০ বছর বয়সী আতিয়ার রহমান বলেন, ৭ জানুয়ারি ভোরে আমার দোকানের পাশে টিউবওয়েল পাড়ে একটা শব্দ হয়। তখন ঘুম থেকে উঠে দোকানের বাইরে বের হয়ে দেখি প্রায় অর্ধ-উলঙ্গ অবস্থায় মেয়েটি অজ্ঞান অবস্থায় টিউবওয়েলের পাড়ে পড়ে আছে।

তিনি বলেন, আমি গিয়ে মেয়েটির মুখে পানি দিয়ে পরিচয় জিজ্ঞেস করি এবং এই সময়ে এখানে আসার কারণ জিজ্ঞেস করি। তখন ওই মেয়ে বলে আগের দিন রাত ১১টার দিকে তার বাড়ি থেকে জোর করে এক যুবক তাকে তুলে নিয়ে আসে এবং নির্জন যায়গায় নিয়ে তাকে ধর্ষণ ও নির্যাতন করে পালিয়ে যায়।

আতিয়ার রহমান বলেন, মেয়েটির কাছে তার পরিচয় ও ঠিকানা নিয়ে তার দাদাকে খবর দিলে তিনি এসে তাকে নিয়ে যান।

এ বিষয়ে মেয়েটির দাদা নিউজবাংলাকে বলেন, সে অসুস্থ ছিল। আমি তাকে ওইখান থেকে নিয়ে এসে ওইদিনই তার নানার বাড়ি ডিমলা উপজেলায় পাঠিয়ে দেই। পরে ওইখানে কী হয়েছে আমি আর জানি না।

ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে জানা যায়, ৮ জানুয়ারি দুপুরে মেয়েটিকে কিটনাশক পান করেছে বলে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরের দিন সন্ধ্যায় মেয়েটি মারা গেলে তার মরদেহ হাসপাতাল থেকে তার নানা নিয়ে এসে দাদার কাছে দেন।

ঘটনার বিষয়ে মেয়েটির নানার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে আবারও এই বিষয়ে কথা হয় মেয়েটির দাদার সাথে।

তিনি বলেন, ওর নানা হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিয়ে এসে আমাকে দেয়। আমি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জায়েদ আলীর সাথে পরামর্শ করলে তিনি বলেন- পুলিশের ঝামেলায় না জড়িয়ে যত দ্রুত সম্ভব মাটি দিয়ে দাও। আমরাও বাধ্য হয়ে তাই করি।

ওই স্কুলছাত্রীর হাসপাতালে মারা যাওয়ার বিষয় অস্বীকার করে ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মো. রাশেদুজ্জামানের বলেন, ‘মেয়েটি আমাদের হাসপাতালে মারা যায়নি। আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুরে নিয়ে যাওয়ার জন্য রেফার্ড করেছিলাম।’

জানতে চাইলে মেয়েটি বাবা বলেন, ‘ভোটের দুইদিন আগে আমি বাড়ি থেকে ঢাকা যাই। এত কিছু হয়েছে আমি কিছু জানি না। যেদিন মারা গেছে সেদিন আমার বাবা আমাকে জানায়। আমি সেটি শুনে সাথে সাথে চলে আসি। আমার এখন মনমানসিকতা ঠিক নাই। কী করবো না করবো কিছুই ভেবে পাচ্ছি না।’

প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারের যোগসাজসে বিষয়টি আপস করানো হয়।

দোষী যুবককে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবি জানান মারা যাওয়া স্কুলছাত্রীর বড় বোন। তিনি বলেন, আমরা জানি না কোন ছেলে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। শুধু জানি তাকে প্রভাবশালীরা চেনে। সে নাকি এলাকার ছেলে। আমরা এর বিচার চাই।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জায়েদ আলীর বলেন, এ বিষয়ে আমি বিন্দুমাত্র কিছুই জানি না। হয়তো ঘটনাটি বিপক্ষ লোকজন আমার ওপর চাপানোর অপচেষ্টা করছে।

জলঢাকা থানার ওসি মুক্তারুল আলম বলেন, ‘ডিমলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত্যু হলে ডিমলা থানায় মামলা হতে পারতো। তবে এ বিষয়ে জলঢাকা থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। যদি অভিযোগ পাই তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

এ বিভাগের আরো খবর