দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেয়ায় মাদারীপুরের কালকিনিতে বেদেপল্লিতে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি বাকামিন খানের নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নির্বাচনের পাঁচ দিন পর শুক্রবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন বেদেপল্লির বাসিন্দারা।
সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, মাদারীপুর-৩ আসনে নৌকায় ভোট দেওয়ায় টানা দুই দিনে বেদেপল্লির ১৭টি বাড়িঘরে তাণ্ডব চালিয়েছেন বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের কর্মী-সমর্থকরা। ওই সময় ঘরবাড়ি ভাঙচুর-লুটপাটের অভিযোগ ওঠে।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্জনা বেগম বাদী হয়ে ১০ জানুয়ারি ৪২ জনের নামে কালকিনি থানায় একটি অভিযোগ করেন, তবে বাদীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কালকিনি থানা পুলিশ মামলা রেকর্ড করেনি। তারা গ্রেপ্তার করছে না অপরাধীদের। এতে আতঙ্ক বিরাজ করছে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে।
বেদেপল্লিতে গিয়ে দেখা যায়, আহাজারি চলছে বেশ কয়েকটি ঘরে। ঘরবাড়ি তছনছ, লুটপাট করা হয়েছে মূল্যবান জিনিসপত্র।
এমন পরিস্থিতিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগম। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত ১৭টি পরিবারকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী দাবি করা একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ, কালকিনির চর ঠেঙ্গামারা গ্রামে কয়েক শ অস্ত্রধারী হামলা চালায় বেদে সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর। বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা দফায় দফায় হামলা চালিয়ে ১৭টি বসতঘরে ভাঙচুর, লুটপাট ও আগুন ধরিয়ে দেন। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়ে পরিবারগুলো।
বেদেপল্লির সরদার মনির হোসেন জানান, একসঙ্গে কয়েক শ মানুষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালায়। ঘর থেকে সবকিছু নিয়ে যায়। নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, দামি আসবাবপত্র, খাবারের চাল-ডালও বাদ পড়েনি। পা ধরে তাদের নিষেধ করলেও কেউ শোনেননি কথা।
তিনি বলেন, ‘হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্রলীগ সভাপতি বাকামিন খান ও তার ভাই রাশেদ খান। আমরা এর বিচার চাই।’
হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে কালকিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বাকামিন খান বলেন, ‘আমি আসার আগেই দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়েছে। আমি থামানোর চেষ্টা করেছি। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়।’
কালকিনি থানার ওসি (তদন্ত) মারগুব তৌহিদ জানান, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মাদারীপুর-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে তাহমিনা বেগম জয়ী হন। বড় ব্যবধানে পরাজিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপ।