সম্পত্তির মালিকানা নির্ধারণ করতে কবর থেকে মরদেহ তুলে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মৃত্যুর ৭ বছর পর বৃহস্পতিবার দুপুরে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার পূর্ব মালসাদহ গ্রামের কবরস্থান থেকে মরদেহের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত হতে মেহেরপুর দ্বিতীয় যুগ্ম জজ আদালতের বিচারক এইচ এম কবির হোসেন এই আদেশ দেন।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাদির হোসেন শামীম, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও আব্দুল আল মারুফ ও গাংনী থানার এসআই জহির রায়হান মরদেহের নমুনা সংগ্রহ করেন। এ সময় সম্পত্তি নিয়ে চলা মামলার বাদী ও বিবাদীরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, পূর্ব মালসাদহ গ্রামের মিজানুর রহমান খোকনের ছেলে আল কবিরকে নিঃসন্তান দম্পতি জুগিরগোফা গ্রামের আব্দুল লতিফ-হাজেরা খাতুন নিজের সন্তানের মতো লালন-পালন করেছেন। এক পর্যায়ে তারা তাদের নামীয় ১৩ বিঘা জমি আল কবিরের নামে রেজিস্ট্রি করে দেন।
আল কবির। ছবি: সংগৃহীত
এদিকে ২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আল কবিরের মৃত্যু হয়। তখন তার বয়স ছিল ২৫ বছর। পরের বছর তার পালিত পিতা আব্দুল লতিফও মারা যান।
এরপর আল কবিরের নামীয় সম্পত্তি দখল করে নেন আব্দুল লতিফের ভাইসহ অন্য শরিকেরা।
এ নিয়ে আল কবিরের জন্মদাতা পিতা মিজানুর রহমান খোকন আদালতে মামলা করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, আল কবির তার ঔরসজাত সন্তান।
অন্যদিকে আব্দুল লতিফ পক্ষ দাবি করেন যে আল কবির আব্দুল লতিফের ঔরসজাত সন্তান।
মূলত আল কবিরের নামে থাকা সম্পত্তিকে কেন্দ্র করেই পিতৃত্ব নিয়ে রশি টানাটানি শুরু হয়।
এ অবস্থায় সন্তানের পিতার পরিচয় নিশ্চিত হতে আব্দুল লতিফের ভাই আবুল কাশেম মেহেরপুর দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে একটি মামলা করেন।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সম্পত্তির মালিকানা নিশ্চিত হতে আল কবিরের প্রকৃত পিতা-মাতা কে তা নিশ্চিত হওয়ার প্রয়োজন দেখা দেয়।
এ অবস্থায় মরদেহের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আদালতের বিচারক এইচ এম কবির হোসেন ডিএনএ পরীক্ষার জন্য মরদেহ কবর থেকে তুলে নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডি ঢাকা বরাবর পাঠানোর জন্য গাংনী থানা পুলিশকে আদেশ দেন।
আদালতের ওই নির্দেশনা অনুযায়ী মৃত্যুর ৭ বছর পরে বৃহস্পতিবার আল কবিরের মরদেহ কবর থেকে তুলে ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করা হয়।