মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার হোসেন্দী ইউনিয়নের নাজিরচর গ্রামে মুন্সীগঞ্জ-৩ আসন থেকে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী ফয়সাল বিপ্লবের ৯ সমর্থকদের বাড়ি-দোকানপাটে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় নারীসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১১ জন। এসব ঘটনয় ৩৫ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর।
আহতরা হলেন- ৬০ বছর বয়সী আবদুর রশিদ, ৫০ বছর বয়সী জোসনা বেগম, ৩২ বছর বয়সী ফারুক, ৫৫ বছর বয়সী সুফিয়া, ১৩ বছর বয়সী জয় ও ইয়াফি, ২০ বছর বয়সী জেরিন, ১৮ বছর বয়সী মৌ, ২৬ বছর বয়সী সোনিয়া, ৫৩ বছর বয়সী সাহিদা এবং ৩০ বছর বয়সী রিনা।
আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বাকিদের কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
নিজেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফয়সাল বিপ্লবের সমর্থক দাবি করে আহত ফারুক বলেন, ‘প্রথম থেকেই নৌকার সমর্থক হোসেন্দী এলাকার মাহবুব মিয়ার লোকজনের সঙ্গে আমাদের বিরোধ ছিল। নির্বাচনে ফয়সাল বিপ্লব জয়লাভ করায় তারা আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। সোমবার সন্ধ্যায় আমরা আনন্দ মিছিলের আয়োজন করেছিলাম। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে মিছিল বের করার আগমুহূর্তে মাহবুব মিয়ার ছোট ভাই সৈকত বাবুর নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন আমাদের বাড়ি এবং দোকানঘরে হামলা চালায়।’
তিনি বলেন, ‘প্রথমে তারা বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে এলাকা অন্ধকার করে ফেলে। তারপর একের পর এক বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালাতে থাকে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দার আলী, সিরাজুল ইসলাম, আব্দুর রশিদ, আল-আমিন, বাবুল মিয়া, আলেক মিয়া, জাকির হোসেনের বাড়ি এবং তিনটি দোকানে ভাঙচুর এবং লুটপাট চালায় তারা। আমরা তাদেরকে বাধা দিতে গেলে নারী ও শিশুসহ অন্তত ১১ জনকে মারধর এবং কুপিয়ে জখম করা হয়। নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল সেট এবং ঘরের মূল্যবান সামগ্রী তারা লুট করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ আসলে সটকে পড়ে তারা।’
হামলায় আহত জেরিন বলেন, ‘নারীদেরকেও তারা ছাড় দেয়নি। নারকীয় কায়দায় যে সামনে এসেছে, তাকেই মারধর করেছে।’
আহত জোসনা বেগম বলেন, ‘আমাকে মারধর করে আমার ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে নগদ টাকা এবং স্বর্ণালংকারসহ অন্তত ৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে তারা।’
বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিষয়ে জানতে চাইলে গজারিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লাইনম্যান তুষার ইমরান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে একাধিক ঘরের মিটার ভেঙে ফেলার বিষয়টি দেখতে পাই আমরা। কয়েকটি ঘরের বৈদ্যুতিক তারও ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে।’
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. খন্দকার আরশাদ কবির বলেন, ‘সন্ধ্যা সাতটার দিকে হামলায় আহত ৫ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের চিকিৎসা চলছে।’
এ বিষয়ে গজারিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ওসি মহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’
মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’