দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আম ও ছালা দুটোই হারিয়েছেন নেত্রকোনা-১ (দুর্গাপুর-কলমাকান্দা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস আরা ওরফে ঝুমা তালুকদার। সংসদ নির্বাচন করতে দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে এসেও কোনো লাভ হয়নি তার, বিপুল ভোটের ব্যবধানে শোচনীয়ভাবে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, ঝুমা তালুকদারের ট্রাক প্রতীক পেয়েছে মাত্র ২৫ হাজার ২১৯ ভোট। আর ওই আসনে জয় পাওয়া মোশতাক আহমেদ রুহীর নৌকা প্রতীক পেয়েছে ১ লাখ ৫৯ হাজার ১৯ ভোট। অর্থাৎ রুহীর চেয়ে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৮শ’ ভোট কম পেয়েছেন ঝুমা। ফলে ভোটের মাঠে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারেননি তিনি।
জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঝুমা তালুকদার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েও পাননি। পরে ‘বিদ্রাহী প্রার্থী’ হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সে সময় নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে উপজেলার প্রথম নারী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে গত ৬ নভেম্বর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পদ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন ঝুমা, কিন্তু এবারও দলের মনোনয়ন জোটেনি তার। এ কারণে ট্রাক প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই ভোটের মাঠে অবতীর্ণ হন।
স্থানীয়রা জানান, দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঝুমা তালুকদার যতটা প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছিলেন, সদ্য অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে তিনি তার কিছুই দেখাতে পারেননি। উপরন্তু উপজেলা চেয়ারম্যানের পদটিও হারাতে হয়েছে তাকে।
অবশ্য ঝুমার দাবি, তার আসনে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। নৌকার সমর্থকরা তার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছেন; ভোটারদের হুমকি দিয়েছেন। কারচুপি করে তারা ভোটে জিতেছেন। ভোটের দিন বিকেলেই সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেন তিনি।
জানা গেছে, ঝুমা তালুকদার দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও তিনবারের সাবেক এমপি প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা জালালউদ্দিন তালুকদারের মেয়ে। নেত্রকোনা জেলায় তিনিই প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান। জেলা আওয়ামী লীগের গত কমিটিতে সদস্য পদ পেয়েছিলেন ঝুমা।