বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে উল্লেখ করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। একইসঙ্গে দাবি আদায়ে গণসংযোগ কর্মসূচি ও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সোমবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে দলটির পক্ষ থেকে এই দাবি তুলে ধরা হয়।
বলা হয়, নির্বাচনে যে পরিমাণ ভোট পড়েছে বলে দেখানো হয়েছে তা সঠিক নয়। এই পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নৈতিক পরাজয় হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এটা কোনো নির্বাচন নয়। এখানে সবাই আওয়ামী লীগ। স্বতন্ত্ররাও প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের দলীয় পদধারী। জাতীয় পার্টি এবং অন্যান্য দলকেও আসন ছাড় দিয়ে জেতানো হয়েছে। কিন্তু জনগণ ভোট দিতে যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘ডামি নির্বাচনে ডামি প্রার্থীদের কাউকে ক্রেন দিয়ে তোলা হয়েছে, আবার কাউকে তোলা হয়নি। বিশ্বের কোনো দেশে স্বতন্ত্র প্রার্থী এভাবে জিতে? নির্বাচন নিয়ে এ ধরনের রসিকতা করার অধিকার কারও নেই।’
তিনি জানান, আগামী দুদিন লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচি করবে বিএনপি। এরপর দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন একবার বলে ২৭ শতাংশ, আবার বলে ৪০ শতাংশ। চার ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচন কমিশন কীভাবে এই হিসাব করল সেটা বোধগম্য নয়। এটা স্পষ্ট যে, ভোট যত শতাংশই পড়ুক না কেন, নির্বাচন কমিশনকে শিখিয়ে দেয়া হয়েছে যে এত শতাংশ বলতে হবে। তারা হয়ত সেটাই বলছে।
‘জনগণ বিশ্বাস করে একদলীয় বাকশালী সরকারের অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। এখানে যেটা হচ্ছে, সেটা ভোট ডাকাতি আর ভোট নিয়ন্ত্রণ। এ নির্বাচনে কে জিতবে আর কে হারবে তা আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল।’
বিএনপির এই বর্ষীয়াণ নেতা বলেন, ‘এ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাব। নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য এ সরকারের পতন শুধু বিএনপির একার দাবি নয়, ৬৩টি দলসহ পুরো বাংলাদেশের জনগণের দাবি। কারণ তারা ভোট দিতে পারছে না।
‘১৪, ১৮ ও ২৪ সালের নির্বাচনে সরকার দেশের মানুষের ভোটাধিকার ক্রমপর্যায়ে ছিনিয়ে নিয়েছে। মানুষ নির্বাচনে আস্থা হারিয়ে ফেলেছ।’
বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আওয়ামী লীগের ভাড়া করা পর্যবেক্ষক বলেও মন্তব্য করেন মঈন খান। তিনি বলেন, ‘যে কংগ্রেসমান নারী নির্যাতনের দায়ে বহিষ্কৃত হয়েছেন, তাকে এই নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে এনেছে আওয়ামী লীগ সরকার। এরা প্রায় সবাই ভাড়া করা পর্যবেক্ষক।’