গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনে ট্রাক নিয়ে নির্বাচন করা স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারজানা রাব্বী বুবলীর বিরুদ্ধে কালো টাকা ছড়িয়ে ভোট কেনার অভিযোগ তুলেছেন ওই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে শনিবার দুপুরে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন রিপন, যার একটি কপি এসেছে নিউজবাংলার হাতে।
নৌকার প্রার্থী লিখিত অভিযোগে বলেন, আসনের ট্রাক মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারজানা রাব্বী বুবলী ও তার স্বামী বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার নির্বাচনি আচরণ বিধিমালার তোয়াক্কা না করে প্রতিনিয়ত নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্ট করছেন। একই সঙ্গে তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানা ধরনের ‘অপতৎপরতা’ চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি উল্লেখ করেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী বুবলী কিছু নারী সমর্থকের মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে কালো টাকা ছড়িয়ে ভোট কেনার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে সুকৌশলে নারী ভোটারদের টাকার বিনিময়ে ট্রাক মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য বেআইনি প্রলোভন দেখাচ্ছেন এবং টাকার বিনিময়ে ভোট কিনছেন। নির্বাচনি এলাকায় বসবাসকারী বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক প্রতিষ্ঠানে টাকা ছড়াচ্ছেন। ট্রাকে ভোট দেয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে শর্তসাপেক্ষে অনুদান দিচ্ছেন।
রিপনের অভিযোগ, কোনো কোনো ভোটার স্বতন্ত্র প্রার্থীর ‘বেআইনি’ প্রস্তাবে রাজি না হলে ফারজানা রাব্বী বুবলীর স্বামী বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন।
অভিযোগে নৌকার প্রার্থী আরও বলেন, “‘সংঘবদ্ধ এই অপরাধী চক্রের’ নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফারজানা রাব্বী বুবলীর আপন চাচাত ভাই ফাহাদ রাব্বী ও তার স্ত্রী ফেরদৌস আরা জান্নাত, ফুলছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম সেলিম পারভেজ ও তার স্ত্রী নাসরিন আক্তার। এ ছাড়া সাঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির ও তার প্রথম স্ত্রী রিভি আক্তার ও দ্বিতীয় স্ত্রী সাদিয়া বিশ্বাস, কঞ্চিপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. সোহেল রানা শালু ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী মোছাম্মৎ জেমি আক্তার, বোনারপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. নাসিরুল আলম স্বপন ও তার স্ত্রী আলো বেগম, ভরতখালী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী মোছলেমা আক্তার তিশি, মুক্তিনগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আহসান হাবীব ও তার স্ত্রী হেলেনা বেগমসহ আরও অনেকেই।
“তাদের মধ্যে জিএম সেলিম পারভেজ ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নাসিরুল আলম স্বপন সাঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।”
জানতে চাইলে নৌকার প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন বলেন, ‘নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রভাব, হুমকি ও কালো টাকা ছড়ানোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।’
অভিযোগের বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারজানা রাব্বী বুবলীর মোবাইল ফোনে কল করা হলে ফোন রিসিভ করেন সাথী নামের একজন। তিনি জানান, বুবলী ব্যস্ত আছেন।
জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী নাহিদ রসুল বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিরুদ্ধে করা অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
গাইবান্ধা-৫ আসনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মাহমুদ হাসান রিপন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারজানা রাব্বী বুবলীসহ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয় প্রার্থী। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জাপা মনোনীত প্রার্থী আতাউর রহমান।