কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসনে ভোটের দিন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের দুর্বল করতে অভিনব পন্থা অবলম্বনের অভিযোগ উঠেছে নৌকার কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। নৌকা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনি প্রচার চালালেও এ আসনের অন্যান্য প্রার্থীর নির্বাচনি এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তারা। এতে ভোটকেন্দ্র দখল করে নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের ভোটারদের স্বাভাবিক ভোটদান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন ওইসব প্রার্থীরা।
এ ঘটনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঁচজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ। নির্বাচনের কাজে নিয়োগপ্রাপ্ত ওই পাঁচ এজেন্টের সবাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা এবং ভোটের প্রচারে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে তাদের সরব ভূমিকায় দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের।
অভিযুক্ত ওই পাঁচজন হলেন- কুমিল্লা উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক লিটন সরকার, তিনি বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির এজেন্ট হয়েছেন; দেবিদ্বার উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, তিনি ইসলামী ঐক্য জোটের এজেন্ট হয়েছেন; দেবিদ্বার পৌরসভার মেয়র সাইফুল ইসলাম শামীম, আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হওয়া শামীম ন্যাশনাল পিপলস পার্টি এজেন্ট; কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি পদ প্রার্থী মো. আবু কাউছার অনিক, যিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির এজেন্ট হয়েছেন এবং দেবিদ্বার উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন, তিনি হয়েছেন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের এজেন্ট।
অভিযোগপত্রে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী লিখেছেন, ‘উল্লিখিত ব্যক্তিরা আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নৌকা প্রতীকের রাজী মাহমুদ ফখরুলের কট্টর কর্মী ও সমর্থক। তারা প্রত্যেকেই নৌকা প্রতীকের নির্বাচনি প্রচারে সম্মুখ সারিতে থেকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। এমন কট্টর সমর্থকদের নিজের দলের নির্বাচনি এজেন্ট না হয়ে অন্য দলের প্রার্থীর এজেন্ট হওয়ায় জনমনে প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে বিধিবহির্ভূতভাবে একজোট হয়ে তারা ভোটকেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দেয়ার জন্যই অন্যান্য প্রার্থীদের নির্বাচনি এজেন্ট নিযুক্ত হয়েছে।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, ‘উল্লিখিত ব্যক্তিদের মধ্যে লিটন সরকার, সাদ্দাম হোসেন ও আবু কাওছার অনিক বেশ কয়েকটি ফৌজদারি মামলার আসামি এবং ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার বরাবর অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তারা অন্যান্য প্রার্থীদের নির্বাচনি এজেন্ট নিযুক্ত হওয়ায় নির্বাচনের দিন অনুমোদিত গাড়ি ব্যবহার করে প্রকৃতপক্ষে আমার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের (নৌকা) অনুকূলে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করবে এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
এ বিষয়ে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিগার সুলতানা বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগপত্রটি নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটিকে ফরওয়ার্ড করা হয়েছে। এ বিষয়ে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’