আগামী রোববার অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার শেষ হওয়ার আগে বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহী ও ফেনীতে পাঁচটি ভোটকেন্দ্রে আগুনের ঘটনা ঘটেছে।
রাজশাহী
জেলার বাঘা, বাগমারা ও মোহনপুর উপজেলায় রাতের কোনো এক সময় চারটি ভোটকেন্দ্রে আগুন লাগে। বাগমারায় ঘটনাস্থল থেকে ককটেল উদ্ধার করে পুলিশ।
বাঘা: ওই থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলার জুতনশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের পরিত্যক্ত ভবনে আগুন ধরে। এতে ভোটকেন্দ্রের কোনো ক্ষতি হয়নি।
‘এ ছাড়া আড়ানী ঝিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রধান শিক্ষকের অফিসে আগুন লাগে। এতে কিছু বই ও আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারণে আগুন ধরে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।’
বাগমারা: উপজেলার ভোটকেন্দ্র হিসেবে নির্ধারিত আক্কেলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে। এতে জানালার কাচ ভেঙে কক্ষের কিছু আসবাবপত্র ও বইপত্র পুড়ে যায়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দুর্বৃত্তরা উপজেলার গনিপুর ইউনিয়নের আক্কেলপুর উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের অফিসকক্ষে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে জানালার কাচ ভেঙে ভেতরে আগুন ধরে যায়। পরে স্থানীয়রা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
বাগমারা থানার ওসি অরবিন্দ সরকার বলেন, ‘বিদ্যালয়ের জানালার কাচ ভেঙে গেছে। কিছু বইও পুড়ে যায়। বিদ্যালয়ের ফটক থেকে ককটেল সদৃশ বস্তু উদ্ধার করা হয়।’
মোহনপুর: উপজেলার মতিহার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মজিবর রহমান জানান, তাদের স্কুলটি ভোটকেন্দ্র। বৃহস্পতিবার রাতে দুর্বৃত্তরা স্কুলের একটি শ্রেণিকক্ষে আগুন দেয়। এতে কয়েকটি বেঞ্চ ও চেয়ার-টেবিল পুড়ে যায়।
ফেনী
জেলার সোনাগাজীর চর দরবেশ ইউনিয়নের চর সাহাভিকারী উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় স্কুলটির শিক্ষক মিলনায়তনে রাখা কম্পিউটারসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু জিনিস পুড়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোটের দুই দিন আগে বৃহস্পতিবার রাতে স্কুলের প্রশাসনিক ভবনের শিক্ষক মিলনায়তনে পেছনের জানালা দিয়ে পেট্রল বা অকটেন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা জামিল আহমেদ খান বলেন, ‘সকালে চর সাহাভিকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আবদুর রহমানের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তনের জানালার পাশে একটি অকটেনের বোতল পাওয়া গেছে।’
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি সুদ্বীপ রায় জানান, শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খায়ের উল্যাহ বলেন, ‘স্কুলের অডিট চলাকালে অনিয়মের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীনকে অব্যাহতি দেন সভাপতি আবদুল হক। এ নিয়ে দীর্ঘদিনের চলমান বিরোধেও এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
জয়নাল আবেদীনের দাবি, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান বলেন, ‘বিদ্যালয়ে আগুনের ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতে বেশ কয়েকটি বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে, তবে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে, সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের দ্বন্দ্বে আলামত নষ্ট করতে দুর্বৃত্তরা শিক্ষক মিলনায়তনে আগুন দিয়েছে, বিষয়টি এমনও হতে পারে।’
এ বিষয়ে কথা বলতে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আবদুল হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।